বন্যার পানিতে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার অন্তত ১৬০টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে দুই লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। প্লাবিত এলাকার লোকজন উঁচু স্থান ও বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে। তবে বন্যাকবলিত এলাকার মানুষ গবাদি পশু নিয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নের মানিকপুর এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে গিয়ে ওই ইউনিয়নের অন্তত ১০টি গ্রাম, কাকারা ইউনিয়নের মোস্তক মিয়ার কুম এলাকায় ৩০০ ফুট বেড়িবাঁধ, শিয়াপাড়া এলাকায় ১০০০ ফুট বেড়িবাঁধ, দক্ষিণ লোটনী এলাকায় ৪০০ ফুট বেড়িবাঁধ ও ফরেস্ট অফিস এলাকায় কালভার্ট ভেঙে গেছে। এই ইউনিয়নের ১২টি গ্রামের অন্তত ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। জিদ্দা বাজার-কাকারা-সুরাজপুর-মানিকপুর সড়ক ডুবে গিয়ে সরাসরি যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। হারবাং ইউনিয়নের চরপাড়ার খালের পাড় ও রাখাইনপাড়া রাস্তা ভেঙে অন্তত ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বরইতলী ইউনিয়নের গোবিন্দপুর, সারের গুদাম এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে গিয়ে অন্তত ৪০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এই ইউনিয়নের শান্তিবাজার-ইউনিয়ন পরিষদ সড়ক ভেঙে গেছে। অন্তত ২০টি মাছের ঘের প্লাবিত হয়েছে। কোনাখালী ইউনিয়নের কইন্যারকুম বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে মাতামুহুরী নদীর পানি ঢুকছে। একইভাবে কৈয়ারবিল, ফাঁসিয়াখালী, ডুলাহাজারা, খুটাখালী, লক্ষ্যারচর, ঢেমুশিয়া, চিরিংগা, বিএমচর, সাহারবিল, পূর্ব বড় ভেওলা, পশ্চিম বড় ভেওলা ও বদরখালী ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকা বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার লোকজন উঁচু স্থানে ও আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে।
কাকারা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সাহাবউদ্দিন বলেন, কাকারার অন্তত চারটি স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। বন্যায় প্লাবিত লোকজনের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। হারবাং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মেহরাজ উদ্দিন বলেন, রাখাইন পাড়া রাস্তা ভেঙে গিয়ে হারবাংয়ের বেশিরভাগ এলাকা ডুবে গেছে। মানুষজন আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিচ্ছে। বরইতলী ইউপি চেয়ারম্যান ছালেকুজ্জামান বলেন, বরইতলীর বেশিরভাগ মাছের খামার বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। ৭৫ ভাগ এলাকা প্লাবিত হয়ে জনসাধারণ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান বলেন, চকরিয়ার দেড় শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়ে অন্তত দুই লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সব চেয়ারম্যানদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে প্লাবিত লোকজন নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে। কোনাখালীর কইন্যারকুম, কাকারা, হারবাং ও বরইতলী এলাকার বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ায় বেশিরভাগ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বান্দরবানে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে বন্যার ভয়াবহতা আরও বাড়বে। বিভিন্ন এলাকায় শুকনো খাবার পাঠানো হচ্ছে।