মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ড পাওয়া দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর গায়েবানা জানাজাকে ঘিরে সংর্ঘষের ঘটনায় দায়ের করা পুলিশের মামলায় চার সাংবাদিক আসামি হওয়ার প্রতিবাদে সভা করেছে কক্সবাজারের চকরিয়া প্রেসক্লাব। শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টায় শুরু হয়ে সভাটি রাত পৌনে আটটা পর্যন্ত চলে।
চকরিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি জাহেদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মিজবাউল হকের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ উল্লাহ, সাংবাদিক এম জিয়াবুল হক, আবুল কালাম আজাদ, বাপ্পী শাহরিয়ার, সাইফুল ইসলাম খোকন, জহিরুল আলম, জামাল হোসেন, ইউছুফ বিন হোছাইন, আরাফাত চৌধুরী প্রমুখ।
চকরিয়া থানার পুলিশ সূত্র জানায়, সাঈদীর গায়েবানা জানাজাকে কেন্দ্র করে সংর্ঘষের ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইন ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে দুটি মামলা করে পুলিশ। গত বুধবার চকরিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আল ফোরকান বাদি হয়ে ৭৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২০০০-২২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দুটি দায়ের করেন। এসব মামলায় দৈনিক মানবকণ্ঠ পত্রিকার চকরিয়া প্রতিনিধি আব্দুল মজিদ, দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ ও পূর্বদেশ পত্রিকার চকরিয়া প্রতিনিধি এ কে এম ইকবাল ফারুক, কক্সবাজারের স্থানীয় দৈনিক কক্সবাজার সংবাদ পত্রিকার চকরিয়া প্রতিনিধি একেএম বেলাল উদ্দিন ও দৈনিক নয়াদিগন্ত পত্রিকার উপকূলীয় সংবাদদাতা এ এম ওমর আলীকে আসামি করা হয়। এরমধ্যে ওমর আলী চকরিয়া উপজেলা যুবদলের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন।
প্রতিবাদ সভায় বক্তারা বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে চকরিয়ার চারজন সাংবাদিক পুলিশের মামলায় আসামি হয়েছেন। কোনোরকম তদন্ত ছাড়াই সাংবাদিকদের আসামি করে পুলিশ অপেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়েছে। একজন সাংবাদিক ঘটনার সময় সরেজমিনে ঘটনাস্থলে থাকলেও অন্য তিনজন সাংবাদিক সেদিন ঘটনাস্থলেই ছিলেন না। যা তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় সহজে বের করা যায়।
সাংবাদিকেরা অভিযোগ করেন, পুলিশ কোনো পক্ষ দ্বারা প্রভাবিত হয়ে অথবা পুলিশের ভেতরকার নানা অসঙ্গতি নিয়ে সংবাদ করায় চকরিয়ার এই চারজন সাংবাদিককে মামলায় অন্তর্ভুক্ত করেছে বলে মনে করে চকরিয়ার সাংবাদিক সমাজ।
সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ দ্রুত মামলা থেকে চার সাংবাদিকের নাম প্রত্যাহারপূর্বক হয়রানি বন্ধের দাবি জানিয়েছেন। অন্যথায় স্মারকলিপি ও মানববন্ধনের ঘোষনা দেওয়া হয়।
প্রতিবাদ সভা চলাকালে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ মাহমুদ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মিজবাউল হকের মুঠোফোনে কল দেন। এসময় তিনি সাংবাদিকদের হয়রানি না করা ও তদন্ত সাপেক্ষে অভিযোগপত্র থেকে সাংবাদিকদের নাম বাদ দেওয়ার আশ্বাস দেন।