কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নের উত্তর মানিকপুর এলাকায় দুইজনকে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। গতকাল মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে উত্তর মানিকপুর স্টেশনের একটি মুঠোফোন দোকানে এই ঘটনা ঘটে।
নিহতেরা হলেন উত্তর মানিকপুর এলাকার নুর মোহাম্মদের ছেলে মো. সেলিম (৪৩) ও আবু সালামের ছেলে শফিউল আলম (৪৮)। শফিউল স্থানীয় গ্রাম পুলিশ।
স্থানীয় লোকজন বলেন, গত ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে বর্তমান ইউপি সদস্য জাহেদ সিকদারের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন স্থানীয় মো.সেলিম। সেই নির্বাচনে সেলিম অল্পভোটের ব্যবধানে হেরে যান। তখন থেকে এলাকার নানা ইস্যুতে জাহেদ ও সেলিমের অবস্থান বিপরীতমুখী।
স্থানীয় লোকজন, কয়েকজন ব্যবসায়ী ও চকরিয়া থানার-পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার রাত পৌনে আটটার দিকে মো. সেলিমকে কৌশলে বাড়ি থেকে স্টেশনে ডেকে নেন ইউপি সদস্য জাহেদ সিকদার। স্টেশনে গিয়ে একটি মুঠোফোনের দোকানে বসেন সেলিম। সেখানে তাঁর সঙ্গে কথা বলছিলেন স্থানীয় গ্রাম পুলিশ শফিউল আলম। এমন সময় জাহেদ সিকদারের নেতৃত্বে ৫-৬জন ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সেলিমের ওপর হামলা করে। হামলায় বাধা দিতে গেলে শফিউল আলমকেও কুপিয়ে জখম করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় দুজনকে উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. সেলিমকে মৃত ঘোষণা করে শফিউল আলমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। পথিমধ্যে রাত একটার দিকে শফিউলও মারা যান।
সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিমুল হক বলেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে জাহেদ সিকদার ও সেলিমের বিরোধ অনেক পুরোনো। একক আধিপত্য ধরে রাখতে দুইজনকে হত্যার মতো ঘটনা ঘটেছে।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, নিহত সেলিম ও শফিউল আলম স্থানীয় যুবলীগের নেতা আবু বক্কর হত্যা মামলার আসামি। এই ঘটনার জেরে তাঁদের কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে কিনা খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি আধিপত্য নিয়ে বর্তমান ইউপি সদস্য জাহেদ সিকদারের সঙ্গে নিহত সেলিমের বিরোধ ছিল। সেই বিরোধের জেরেও খুনের ঘটনা ঘটতে পারে।
ওসি বলেন, লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অপরদিকে এখন পর্যন্ত মামলা না হলেও মূল ঘটনা উদ্ঘাটন পূর্বক সন্ত্রাসীদের ধরতে পুলিশ কাজ করছে।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি আবু বক্করকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এঘটনায় ৩৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন নিহত আবু বক্করের স্ত্রী সোনিয়া আকতার। সেই মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি মো. সেলিম ও শফিউল আলম।