কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক নারী ভাইস চেয়ারম্যান জেসমিন হক জেসি চৌধুরী ও তাঁর ভাই শহিদুল ইসলাম লিটনের চার বসতবাড়িতে হামলা-ভাঙচুর ও তাণ্ডব চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এসময় হামলাকারীরা পরিবার সদস্যদের জিন্মি করে চারটি বসতবাড়ির আলমিরা ভেঙে নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কারসহ অন্তত ৮০ লাখ টাকার মালামাল লুট ও ক্ষতিসাধন করেছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার সদস্যরা। গত ৫ আগস্ট বিকেল চারটার দিকে চকরিয়া থানা সেন্টার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
হামলাকারী দুবৃর্ত্তদের হুমকির মুখে ঘটনার পর বাড়ি থেকে প্রাণের ভয়ে অন্যত্র পালিয়ে গেছেন নারী ভাইস চেয়ারম্যান জেসি চৌধুরীসহ তাঁর পরিবার সদস্যরা। আজ বুধবার (৭ আগস্ট) বিকেলে বাড়ি ফিরে স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে হামলা তাণ্ডবের ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন জেসি চৌধুরীর ছোট ভাই শহিদুল ইসলাম লিটন।
শহিদুল ইসলাম লিটন বলেন, আমি কোনো ধরনের রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নই। ব্যবসা-বাণিজ্য করে পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করি। আমার সঙ্গে কারও বিরোধ নেই। এই অবস্থায় গত ৫ আগস্ট বিকেলে প্রতিবেশি নুরুল হোছাইনের ভাইয়ের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন দুর্বৃত্ত অতর্কিত আমার বাড়ির দরজা ভাঙার চেষ্টা করে। এসময় আমি দরজার পাশে গিয়ে ঘটনা জানতে চাইলে হামলাকারী নুরুল আলম আমাকে ধারালো অস্ত্রে আঘাত করতে হামলে পড়ে। এ অবস্থায় আমি পালিয়ে বাড়িতে ঢুকে স্ত্রী-সন্তান সবাইকে নিয়ে একটি রুমে লুকিয়ে থাকি। একপর্যায়ে হামলাকারী দুবৃর্ত্তরা প্রথমে তালা ভেঙে আমার বোন সাবেক নারী ভাইস চেয়ারম্যান জেসি চৌধুরীর বাড়িতে ঢুকে নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, টিভি ফ্রিজসহ সম্পুর্ন মালামাল লুট করে। এরপর তাঁরা আমার বাড়িতে ঢুকে হামলা চালিয়ে সকল রুমে ব্যাপক ভাঙচুর করে। একপর্যায়ে তাঁরা আমার ছোট বোন সোনিয়ার রুমে ঢুকে আলমিরা ভেঙে ১৩ ভরি স্বর্ণালঙ্কার এবং আমার বাড়ির টিভি, ফ্রিজ, চেয়ার-টেবিল থেকে শুরু করে সব মালামাল লুট ও ভাঙচুর করে। হামলার একপর্যায়ে তাঁরা আমার বাড়ি লাগোয়া রামপুর সমবায় ও কৃষি উপনিবেশ সমিতির অফিসে ঢুকে ভাঙচুর চালিয়ে আলমিরা ভেঙে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র লুট ও তছনছ করে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করেছে।
চকরিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক নারী ভাইস চেয়ারম্যান জেসমিন হক জেসি চৌধুরী বলেন, হামলাকারীরা এদিন আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে একে একে আমাদের চারটি বাড়িতে ঢুকে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে। তাঁরা এসময় আমার বাড়ির আলমিরা ভেঙে নগদ সাড়ে ১১ লাখ টাকা, ২৩ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, কাপড়চোপড়, টিভি ফ্রিজ, আসবাবপত্র এবং আমার জায়গা জমির দলিলপত্র, বিভিন্ন ব্যাংকের চেকবই লুট করে নিয়ে গেছে। সবমিলিয়ে আমার পরিবারের ৭০ থেকে ৮০ লাখ টাকার ক্ষতিসাধন হয়েছে।
জেসি চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, ঘটনার পর থেকে হামলাকারী সন্ত্রাসীদের হুমকির মুখে আমি প্রাণের ভয়ে গত তিনদিন ধরে বাড়ি ফিরতে পারছিনা। এ অবস্থায় তাঁরা আমার বাড়িভিটা, দোকানপাট ও জায়গা জমিগুলো জবরদখলে নিতে মহড়া দিচ্ছে। এতে নিজের এবং পরিবার সদস্যদের নিরাপত্তা নিয়ে আমি চরম আতকে ভুগছি।
এ অবস্থায় আমাদের জীবনের নিরাপত্তা ও বাড়িঘর জায়গা জমির সুরক্ষাকল্পে চকরিয়ায় নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছি।