👤 সমুদ্র সংবাদ ডেস্ক
নিয়োগের একদিন পরই প্রত্যাহার হয়েছেন কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজিম উদ্দিন। রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় সিনিয়র সহকারী সচিব মোহাম্মদ মামুন শিবলী স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে প্রত্যাহারের বিষয়টি জানানো হয়েছে।
এর আগে শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার কাউছার হামিদ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে নাজিম উদ্দিনকে পদায়ন করা হয়েছিল।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার ইউএনওর পদ থেকে প্রত্যাহারের পর নাজিম উদ্দিনকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের উপ-পরিচালক হিসেবে বদলি করা হয়েছে।
ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘রবিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনে নাজিম উদ্দিনকে ইউএনও করে পদায়ন করার আদেশ প্রত্যাহার করেছে। কুড়িগ্রামে মধ্যরাতে ঘরের দরজা ভেঙে সাংবাদিককে তুলে নিয়ে নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত তিনি। বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে নিয়োগের একদিন পরই নাজিম উদ্দিনকে প্রত্যাহার করা হয়।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কুড়িগ্রামের তৎকালীন জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীনের নামে সরকারি পুকুরের নামকরণ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে ২০২০ সালের ১৩ মার্চ মধ্যরাতে সাংবাদিক আরিফকে তার শোবার ঘরের দরজা ভেঙে তুলে নিয়ে যান জেলা প্রশাসনের কয়েকজন ম্যাজিস্ট্রেট ও আনসার সদস্য। আরডিসি নাজিম উদ্দিনের নেতৃত্বে আরিফকে মারধর করে গাড়িতে তুলে জেলা শহরের পূর্ব প্রান্তে ধরলা নদীর তীরে ‘ক্রসফায়ার’ দেওয়ার উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে ফিরিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়ে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করা হয়। আরিফের ঘরে আধা বোতল মদ ও দেড়শ গ্রাম গাঁজা পাওয়ার অভিযোগ এনে মধ্যরাতে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে এক বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়ে রাতেই কারাগারে পাঠানো হয়। পরে এ ঘটনায় দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠলে এক দিনের মাথায় জামিনে মুক্তি পান আরিফ। পরবর্তীতে আরডিসি নাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে সাংবাদিক আরিফকে হেনস্থার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে নিম্নধাপে নামিয়ে দেওয়া হয়। সে সময় নাজিম উদ্দিনের নামে একটি মামলাও করেন আরিফ।
অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সুলতানা পারভীনকে দুই বছরের জন্য বেতন বৃদ্ধি স্থগিত, এনডিসি রাহাতুল ইসলামের ৩টি ইনক্রিমেন্ট কর্তন, আরডিসি নাজিম উদ্দিনকে নিম্ন ধাপে নামিয়ে দেওয়া এবং রিন্টু বিকাশ চাকমাকে চাকরিচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নেয় জনপ্রশাসন। তবে তারা রাষ্ট্রপতির কাছে দাপ্তরিক দায়মুক্তি নিয়ে চাকরিতে বহাল রয়েছেন।
নাজিম উদ্দিন কক্সবাজার সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ওই সময় তাঁর বিরুদ্ধে দূর্নীতি, ক্ষমতার প্রভাব ও হয়রানির অভিযোগ উঠলে রাঙামাটি পার্বত্য জেলার জুরাছড়ি উপজেলায় বদলি করা হয় ।