Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন দিশানায়েকে

বামপন্থী রাজনীতিবিদ অনূঢ়া কুমারা দিশানায়েকে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিতেছেন। ঐতিহাসিক দ্বিতীয় দফা ভোট গণনার পর রবিবার তাকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। এবার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন অনূঢ়া কুমারা দিসানায়েকে।

স্থানীয় সময় আজ সোমবার রাজধানী কলম্বোতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন তিনি।
অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে শ্রীলঙ্কার ইতিহাস ‘নতুন করে রচনার’ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অনুড়া। নির্বাচনে তার এই জয়কে দুর্নীতি ও স্বজনতোষণের সংস্কৃতির প্রত্যাখ্যান হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকেরা।
প্রথম বামপন্থী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দিসানায়েকে শপথ নেওয়ার পরপরই বলেন, ‘রাজনীতিবিদদের প্রতি জনগণের আস্থা পুনরায় ফিরিয়ে আনার জন্য আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করব।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি জাদু দেখাই না, আমি জাদুকর নই।
এমন কিছু আছে যা আমি জানি এবং এমন কিছু থাকতে পারে যা আমি জানি না। তবে আমি সেরা পরামর্শ চাইব এবং আমার সেরাটাই করব। এজন্য সবার সহযোগিতা চাই।’
এর আগে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর ৫৫ বছর বয়সী দিশানায়েকে বলেন, তার এই বিজয় বহু লোকের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত।

দীর্ঘ এই সংগ্রামের পেছনে রয়েছে বহু লোকের ঘাম, অশ্রু ও জীবনদানের মতো ঘটনা। তিনি বলেন, ‘আজ আমরা শ্রীলঙ্কার নতুন ইতিহাস রচনার জন্য একত্রিত হয়েছি।’
প্রথম দফায় কোনো প্রার্থী মোট ভোটের ৫০ শতাংশের বেশি পাননি। সেখানে দিশানায়েকে ৪২.৩১ শতাংশ ভোট পান এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিরোধী নেতা সাজিথ প্রেমদাসা পান ৩২.৭৬ শতাংশ ভোট।

পরবর্তীতে ভোটারদের সু-শাসন ও দুর্নীতিবিরোধী কঠোর পদক্ষেপের প্রতিশ্রুতি দেওয়া দিশানায়েকে দ্বিতীয় দফা ভোট গণনার পর বিজয়ী হন।

দ্বিতীয় দফায় ভোটারদের দ্বিতীয় ও তৃতীয় পছন্দের প্রার্থীদের ভোট যোগ করা হয়। দ্বিতীয় দফায় ভোট গণনা শেষ হওয়ার পর নির্বাচন কমিশন জানায়, দিশানায়েকে তিনি মোট ৫৭ লাখ ৪০ হাজার ১৭৯ ভোট পেয়েছেন। অন্যদিকে প্রেমদাসা পেয়েছেন ৪৫ লাখ ৩০ হাজার ৯০২ ভোট।
শনিবারের এই নির্বাচনটি ছিল ২০২২ সালে শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটের পর গণবিক্ষোভে দেশের নেতা গোতাবায়া রাজাপক্ষেকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর অনুষ্ঠিত প্রথম নির্বাচন।

বিদায়ী প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহের স্থলাভিষিক্ত হবেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট দিশানায়েকে। বিক্রমাসিংহে এমন একটা সময়ে দায়িত্ব নিয়েছিলেন, যখন দ্বীপদেশটির সরকার প্রথমবারের মতো বিদেশি ঋণের কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হয়। প্রথম দফায় বর্তমান প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে ১৭ শতাংশ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে অবস্থান করেন। তিনি দ্বিতীয় দফার গণনা থেকে বাদ পড়েন, যা শুধু দুই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে হয়।

বিক্রমাসিংহে তার উত্তরসূরিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘এই প্রিয় জাতির প্রতি গভীর ভালোবাসা ও সম্মানের সঙ্গে আমি এর ভবিষ্যৎ নতুন প্রেসিডেন্টের হাতে তুলে দিচ্ছি।’

অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের জন্য দিশানায়েকে উৎপাদন, কৃষি ও তথ্যপ্রযুক্তির মতো খাতগুলোর উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি শ্রীলঙ্কাকে অর্থনৈতিক সংকট থেকে উদ্ধার করার জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সঙ্গে করা চুক্তি চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে তিনি দেশের দরিদ্রতম মানুষের ওপর সংস্থাটির কঠোর প্রভাব কমানোর চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন।

2Shares