👤 নিজস্ব প্রতিবেদক, পেকুয়া
কক্সবাজারের পেকুয়ায় শিক্ষক মোহাম্মদ আরিফ হত্যার ঘটনায় পেকুয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমকে আটক করেছে র্যাব। গতকাল শনিবার চট্টগ্রাম নগরীর সদরঘাটের পূর্ব মাদারবাড়ি এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। এর আগে এই ঘটনায় রুবেল খাঁন নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লে. কর্ণেল এইচএম সাজ্জাদ হোসেন। তিনি বলেন, এই বিষয়ে আজ রোববার প্রেস ব্রিফিং করা হবে।
নিহতের পরিবার ও পুলিশ জানায়, গত ২৮ সেপ্টেম্বর রাত নয়টার দিকে পেকুয়া চৌমুহনী থেকে হেঁটে বাড়ি ফেরার পথে ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সামনে থেকে অপহৃত হন পেকুয়া সেন্ট্রাল স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আরিফ। তাকে অপহরণের পর প্রথম দফায় ২৫ লাখ, দ্বিতীয় দফায় ৩৫ লাখ ও তৃতীয় দফায় ৪০ লাখ মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। গত ১ অক্টোবর অপহৃত শিক্ষক মোহাম্মদ আরিফের ছোটভাই রিয়াদুল ইসলাম অজ্ঞাত আসামি দিয়ে পেকুয়া থানায় একটি অপহরণ মামলা করেন। এরপর পুলিশ ও র্যাব অপহৃতকে উদ্ধারে বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করতে থাকেন। একপর্যায়ে ১০ অক্টোবর দিবাগত রাত তিনটার দিকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত রুবেল খাঁনকে (২৭) গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে গ্রেপ্তারের ১৩ ঘণ্টা পর ১১ অক্টোবর বিকেল চারটার দিকে নিজ বাড়ির আঙিনার একটি পরিত্যক্ত পুকুরে পায়ে ইট বাঁধা অবস্থায় আরিফের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশ উদ্ধারের পর পরই উত্তেজিত জনতা আরিফের বাড়ির পাশের পেকুয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমের বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে। পরে তাঁদের অন্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানেও আগুন দেওয়া হয়।
গ্রেপ্তার রুবেল পাঁচদিনের রিমান্ডে
চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লার কাঁচাবাজার সংলগ্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার রুবেল খাঁনের পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল শনিবার তাকে চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তুলে ১০দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ। আদালত পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
রুবেল চাঁদপুর জেলার সদর উপজেলার তরপুরচন্ডী গ্রামের হাবিবুল্লাহ খাঁনের ছেলে। রুবেল খানের কাছ থেকে শিক্ষক আরিফের ব্যবহৃত মুঠোফোনটি উদ্ধার করা হয়। এই মুঠোফোন দিয়েই আরিফের পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছিল।
রুবেলকে গ্রেপ্তারের পর র্যাবের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে আরিফের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছিলেন রুবেল। অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের প্রাথমিক পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে রুবেল অন্যতম। রুবেল এই হত্যাকাণ্ড ও মুক্তিপণ আদায়ের সঙ্গে নিজের সংশ্লিষ্টতার কথা অকপটে স্বীকার করেছেন। এই রুবেলই সরাসরি অপহৃতের স্বজনদের নিকট অপহৃতের মোবাইল থেকে দফায় দফায় কল দিয়ে মুক্তিপণ দাবি করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, রুবেল খাঁন একটি বেসরকারি মুঠোফোন কোম্পানির মার্কেট ডেভেলপমেন্ট অফিসার (এমডিও) পদে পেকুয়ায় কর্মরত ছিলেন। ওই শিক্ষক আরিফের বাড়িতে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন।
পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সিরাজুল মোস্তফা বলেন, গ্রেপ্তার রুবেল পাঁচদিনের রিমান্ডে আছে। উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমকে আটকের খবর শুনেছি। তবে এখনও থানায় হস্তান্তর করা হয়নি।