কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক দুইবছর আগের গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া অনুষ্ঠানের পুরস্কার ক্রয়ের জন্য টাকা নেয়ার পুরানো একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে হয়রানি করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
দুইবছর আগের ভিডিও চিত্র অতিসম্প্রতি ছড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় রীতিমতো হতবাক হয়েছেন চকরিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম। তিনি এই ঘটনাটি চকরিয়ার একটি মাদ্রাসার শিক্ষকদের দলাদলির জেরে নিজে বলি হয়েছেন বলে দাবি করেছেন।
চকরিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ২০২২ সালের জুন-জুলাই মাসে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (উচ্চ বিদ্যালয় ও মাদরাসা) গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা সম্পন্ন শেষে পুরস্কার বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরই অংশ হিসেবে উপজেলা প্রশাসন ও মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সিদ্ধান্ত মোতাবেক চকরিয়া উপজেলার মোট ৬০টি উচ্চ বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা থেকে দুই হাজার টাকা করে চাঁদা নির্ধারণ করা হয়।
তিনি বলেন, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের সহকারী বিউটি দাশ মোট ৫০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃক পুরস্কার ক্রয়ের জন্য দেওয়া এক লাখ টাকা আমাকে দেন। ওইদিন আমি ওই টাকা গুনতে দিই আমার অফিসে উপস্থিত মাদ্রাসার সহসুপার আবু হুরায়রাকে। পরে তিনি গুনে ওই টাকা আমাকে দিলে আমি প্যান্টের পকেটে নিই।
সেইদিন রিংভং মাদ্রাসার সুপার মাহবুবুল আলম ছিদ্দিকী ও সহসুপার আবু হুরায়রা তাঁদের মাদ্রাসার একটি তদন্তের বিষয়ে আমার সঙ্গে কথা বলতে অফিসে এসেছিলেন। টাকাগুলো পকেটে নেয়ার আগে আমি জানতে চাইলে সহসুপার আবু হুরায়রা এক লাখ আছে জানায়। একইসময়ে মাদ্রাসা সুপারকে আমি বলি কাজ হয়ে যাবে।
চকরিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম দাবি করেন, পুরস্কার ক্রয়ের টাকা পকেটে নেয়ার মুহুর্তে মাদ্রাসার তদন্তের বিষয়ে কথা বলছিলাম। আর সেই মুহুর্তের আলাপ-আলোচনা অসৎ উদ্দেশ্যে মাদ্রাসার কেউ সেখানে কৌশলে ভিডিও করে। আর এই ভিডিও চিত্রটি দুইবছর পরে এসে কতিপয় মহল আমাকে ফাঁসানোর জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়েছেন। শিক্ষা কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, মাদ্রাসার শিক্ষকদের দলাদলি ও দ্বন্দের জেরে এতদিন পরে এসে ভিডিও চিত্রটি বাজারজাত করেছে। তিনি দাবি করেন, আমি এধরণের অবৈধ ঘুষ লেনদেনের মতো ঘটনায় কোনমতে জড়িত নই। ক্রীড়া অনুষ্ঠানের পুরস্কার ক্রয়ের টাকা নেয়ার ঘটনাকে ভিডিও করে দুইবছর পরে এইধরনের হয়রানিমুলক অপচেষ্টা চালানোর ঘটনায় আমি রীতিমতো হতবাক। যাছাই বাছাই না করে এধরণের ভিত্তিহীন অপপ্রচার গণমাধ্যম নীতিমালার পরিপন্থি বলে মনে করি।
আরও পড়ুন
চকরিয়ার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার ঘুষ লেনদেনের ভিডিও ভাইরাল!
চকরিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম বলেন, আমি পুরানো ভিডিও চিত্র নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও ফেসবুকে প্রকাশিত কল্পকাহিনির তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি। একইসঙ্গে উল্লেখিত বিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে বিভ্রান্ত না হতে বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য ২৩ নভেম্বর সমুদ্র সংবাদ-এ শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলামের ঘুষ লেনদেনের ভিডিও ভাইরাল সংক্রান্ত একটি সচিত্র সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে তিনি সাংবাদিকদের কাছে তাঁর বক্তব্য তুলে ধরেন।