Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

পেকুয়ায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের দুই কর্মকর্তার অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র বাণিজ্য

কক্সবাজারের পেকুয়ায় ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ইন্সপেক্টর দিদারুল আলম ও লিডার সালাহউদ্দিনের বিরুদ্ধে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র (এক্সটিংগুইশার) বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে।  অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র বিতরণের নামে পেকুয়ার সাধারণ দোকানদারের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এই দুই কর্মকর্তা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জনসংযোগ কাজে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ব্যবহারের নিয়ম রয়েছে সপ্তাহে একদিন শনিবার। কিন্তু তারা নিয়ম না মেনে সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন জনসংযোগের নাম দিয়ে বিভিন্ন স্টেশনে ঘুরে ঘুরে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র সংগ্রহ করেন। পরে সংগ্রহ করা যন্ত্রগুলো রিফিলিং করার নামে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন তাঁরা। যে সকল দোকানে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র নেই তাদের হুমকি-ধমকি দিয়ে একেকটি যন্ত্র দুই থেকে আড়াই হাজার টাকায় বিক্রি করেন। এছাড়া পুরাতন অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের মেয়াদ চলে গেছে বলে হুমকি দিয়ে রিফিল করার কথা বলে সাতশ থেকে এক হাজার টাকা আদায় করেন। এভাবে তারা দুইজনে লাখ লাখ টাকা ইতোমধ্যে পকেটে ভরেছেন।
  
সরেজমিনে পেকুয়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, স্টেশন কর্মকর্তার কক্ষের পাশে অন্তত ৩০ টি অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র মজুদ করে রাখা হয়েছে। সাংবাদিকের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা এসব যন্ত্র তড়িঘড়ি করে অন্য জায়গায় সরিয়ে রাখেন। পরে লিডার সালাহউদ্দিন তার ভুল স্বীকার করে এ প্রতিবেদককে সংবাদ পরিবেশন না করার জন্য অনুরোধ করেন।

পেকুয়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তার কার্যালয়ের পাশে মজুদ করে রাখা অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র । ছবি সমুদ্র সংবাদ

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ফায়ারকর্মী বলেন, মজুদ রাখা এসব অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র বারবাকিয়া বাজার, টৈটং বাজার, আরবশাহ বাজার, সবুজ বাজারসহ বিভিন্ন স্টেশনের দোকান থেকে সংগ্রহ করে মজুদ করেছেন।

ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে করে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র  সংগ্রহ পূর্বক নিয়ে আসার আরেকটি ছবি এ প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। ছবিটি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ফায়ার কর্মীদের নিয়ে জনসংযোগে বের হন তারা। জনসংযোগের নাম দিয়ে মূলত তারা সংগ্রহ করেন এসব যন্ত্র। ছবির এই গাড়িতেও তারা প্রায় ১৮ টি অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র সংগ্রহ করেছেন। সেগুলো পরবর্তীতে নতুন একটি স্টিকার লাগিয়ে  সাতশ থেকে এক হাজার নিয়ে পুনরায় বিতরণ করে আসবেন সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে।

বারবাকিয়া বাজার ও টৈটং বাজারের বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, আমাদের দোকানের পুরাতন অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রগুলো ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কয়েকজন লোক রিফিলিং করার কথা বলে নিয়ে গেছে। যন্ত্রগুলো পরিবর্তন করে দেওয়ার জন্য সাতশ আবার অনেকের কাছ থেকে এক হাজার টাকাও দাবি করছেন। যেসব দোকানে মোটেও অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র নেই তাদের কাছে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা নিয়েছেন। ব্যবসায়ীরা আরও জানান, যেহেতু তারা এসে নানা অযুহাত দিয়ে যন্ত্রগুলো নিয়ে যাচ্ছে তাই আমরা দিয়ে দিয়েছি। তবে এসবের নিয়মকানুন সম্পর্কে আমরা অবগত নই।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পেকুয়া ফায়ার সার্ভিসের দায়িত্বরত লিডার সালাহউদ্দিন বলেন, আমি ছোট পদে চাকরি করি। দয়া করে আমার ক্ষতি করিয়েন না। আমি স্টেশন ইন্সপেক্টরের নির্দেশ পালন করছি। আপনি এ বিষয়ে স্টেশন ইন্সপেক্টরের সাথে কথা বলেন।

যোগাযোগ করা হলে পেকুয়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের  ইন্সপেক্টর দিদারুল আলম বলেন, এই বিষয়ে আমি আপনার সঙ্গে সামনা সামনি বসে চা আড্ডায় বলবো। মোবাইলে এতসব কথা বলা সম্ভব না বলে এ প্রতিবেদকের মুঠোফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

3Shares