👤 নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া
কক্সবাজারের চকরিয়ায় ছুরিকাঘাতে যুবককে খুনের ঘটনায় পাঁচজনের নামে মামলা রুজু হয়েছে। আজ বুধবার সকালে নিহতের ভাই বাদি হয়ে চকরিয়া থানায় মামলাটি দায়ের করেন। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার চারজনকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে তাঁদের কক্সবাজার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার কৈয়ারবিল ইউনিয়নের হাসিমার কাটা এলাকায় ছুরিকাঘাতে নিহত হন আরিফ হোসেন (৩৫) নামের এক যুবক। একই ঘটনায় আহত হন আরিফের জেঠাতো ভাই খায়ের উদ্দিন (৩৬। তিনি বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
চকরিয়া থানার পুলিশ জানায়, কৈয়ারবিল ইউনিয়নের হাসিমার কাটা এলাকায় যুবককে খুনের ঘটনায় আজ বুধবার সকালে নিহতের ভাই আরমান হোসেন বাদি হয়ে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। মামলার আসামিরা হলেন চকরিয়া উপজেলার কৈয়ারবিল ইউনিয়নের হাসিমার কাটা এলাকার মৃত জয়নাল আবেদীন ওরফে রাজা মিয়ার ছেলে সাজ্জাদ হোসেন ওরফে সুজন (৩৫),তাঁর মা ফাতেমা বেগম (৫৫), বোন রেশমী আকতার (২২), ভাবী রচনা আকতার (২৮) ও স্ত্রী জাকিয়া সোলতানা (২৫)। আসামিদের মধ্যে হত্যাকাণ্ডের পরপরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে সাজ্জাদ, ফাতেমা, রচনা ও জাকিয়া গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাঁদের আজ দুপুরে চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হলে আদালত তাঁদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে তাঁদের কক্সবাজার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন বলেন, গতকাল মঙ্গলবার সকালে কৈয়ারবিল ইউনিয়ন পরিষদ স্টেশনে বাজার করতে যান আরিফ হোসেন। বেলা ১১টার দিকে বাজার নিয়ে হেঁটে বাড়ি ফেরার সময় তাঁর সঙ্গে ফিরছিলেন খায়ের উদ্দিনও। স্থানীয় রাজা মিয়ার বাড়ির সামনে পৌঁছালে সাজ্জাদ হোসেন ওরফে সুজন নামের এক যুবক ছুরি নিয়ে আরিফকে পেটে ও বুকে পর পর আঘাত করেন। এসময় আরিফের সঙ্গে থাকা খায়ের উদ্দিন বাধা দিলে তাকেও পেটে ছুরিকাঘাত করেন সাজ্জাদ। একপর্যায়ে আরিফ ও খায়ের মাটিতে পড়ে গেলে সাজ্জাদ পালিয়ে যান।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, সাজ্জাদ ছুরিকাঘাত করার পর দৌঁড়ে নিজের বসতঘরে ঢুকে পড়েন। পরে উত্তেজিত লোকজন পরিষদ স্টেশনে সাজ্জাদের মালিকানাধীন টিনের বেড়া দেওয়া কয়েকটি দোকানে ভাঙচুর চালান। গতকাল বুধবার বিকেল তিনটার দিকে উত্তেজিত জনতা খবর পান সাজ্জাদ নিজের বসতঘরেই আছেন। তখন জনতা তাঁর বসতঘরটি চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলেন। পরে সাজ্জাদ নিজেই জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে তাঁর বসতঘর ঘিরে ফেলা ও নিজের জীবন বাঁচাতে আকুতি জানান। পরে চকরিয়া থানা থেকে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে সাজ্জাদ হোসেন, তাঁর স্ত্রী, মা ও ভাবীকে আটক করে থানায় নিয়ে যান।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ছুরিকাঘাতে খুনের ঘটনায় পাঁচজনের নামে মামলা রুজ হওয়ার পর আটকদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে তোলা হয়। আদালত তাঁদের জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।