
আমরা জন্মাই বাতাসের গন্ধে,
যেখানে পোস্টারে লেখা থাকে না নাম—
শুধু স্মৃতির দেয়ালে, ধুলোর নিচে
একেকটা দীর্ঘশ্বাসের মতো লেগে থাকি আমরা!
আমরা সকাল হই না,
কারণ ভোরের আলো চেনে শুধুই সিংহাসনের ছায়া।
আমরা নিঃশব্দ, কিন্তু আমাদের নীরবতা একদিন ভূমিধস হবে, জানো?
আমরা গাই না রাষ্ট্রভক্তি,
আমরা মুখস্ত করিনি ইতিহাসের তর্জনী—
আমরা লিখেছি শরীরের খামচে ওঠা দাগে,
লিখেছি মায়ের না-পাওয়া ওষুধের কষ্টে, বোনের বিকিয়ে যাওয়া চুলে।
আমরা যুদ্ধ করি না পতাকার জন্য,
আমরা যুদ্ধ করি খিদের পেটে,
ভাঙা চশমার পেছনে বাবার দৃষ্টি রাখার জন্য।
আমরা কবিতা লিখি—
না কোনো পুরস্কারের জন্য,
না কোনো শ্রদ্ধার মালার আশায়—
আমরা লিখি কারণ শব্দ ছাড়া
আমাদের অস্তিত্ব প্রমাণের আর কিছু নেই।
একদিন সেই শব্দগুলো
গ্রেনেড হয়ে ফাটবে তোমাদের সভাগৃহে, মাঠে-ময়দানে,
তোমার বিবৃতি, তোমার নীতির দেওয়ালে
ফাটল ধরিয়ে দেবে অনুক্ষণ ।
সেদিন, ইতিহাস ঘুরে দাঁড়াবে—
আঁধারের ভেতর খুঁজবে আমাদের মুখ,
আর বলবে:
‘যারা এসেছিল নীরব থেকে,
তাদেরই বজ্র হয়ে উঠেছিল কণ্ঠ।’
আমরা ইতিহাস নই,
আমরা ইতিহাসের অনুপস্থিতি।
তবু বিশ্বাস রাখো—
একদিন সেই অনুপস্থিতিই
সবচেয়ে বড় উপস্থিতি হয়ে দাঁড়াবে।