Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

হেলাল মুন্সির বিরুদ্ধে ভরাচরবাসীর যত অভিযোগ, মানববন্ধন

চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড ছাইরাখালী ভরাচর এলাকায় বসবাসরত শতাধিক পরিবার হঠাৎ করে উচ্ছেদ আতঙ্কে ভুগছেন। চকরিয়া পৌরসভার কাহারিয়াঘোনা এলাকার বাসিন্দা হেলাল উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি ভরাচর গ্রামে গিয়ে প্রভাব দেখিয়ে একটি সমবায় সমিতির নাম ভাঙিয়ে ভরাচরে বসবাসরত পরিবারগুলোকে বসতবাড়ি উচ্ছেদের হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ অবস্থায় জড়িত চক্রের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ গ্রহণপূর্বক ওই এলাকায় নিরাপদ পরিবেশে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করার নিশ্চয়তার দাবিতে মানববন্ধন করেছে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী। 

গতকাল সোমবার (১৬ জুন) বিকেল পাঁচটার দিকে ভরাচর মসজিদের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ছাইরাখালী ভরাচর এলাকার ভুক্তভোগী পরিবারের নারী-পুরুষ শিশুসহ বিপুল সংখ্যক এলাকাবাসী অংশ নেন। 

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন ভরাচর গ্রামের বাসিন্দা জামাল উদ্দিন (৫৮), আনোয়ারুল ইসলাম নাগু (৬৬), আবদুল আজিজ (৪২) স্থানীয় দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী খালেদা বেগম (৪২), জামাল উদ্দিনের স্ত্রী মোহছেনা বেগম (৫০) ও আক্তার হোসেনের স্ত্রী হালিমা বেগম (৪২)। 

আনোয়ারুল ইসলাম নাগু বলেন, আমি শারিরীকভাবে অসুস্থ। কয়েকদিন আগে ডাক্তার দেখাতে চকরিয়া উপজেলা সদরে যাই। সেখানে হেলাল উদ্দিন মুন্সি আমাকে দেখে এগিয়ে এসে হুমকি দিয়ে বলেন, তোমার ভাই জামাল উদ্দিন বেশি সেয়ানা হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে কথা বলছে। তাকে আবারও মামলায় ঢুকিয়ে দেব জেলে পাঠাবো। তারপর দেখবো কীভাবে জামিনে আসে। 

জামাল উদ্দিন বলেন, নিজেদের পারিবারিক এবং বনমামলা পরিচালনা করতে গিয়ে হেলাল মুন্সির সঙ্গে পরিচয়। সেই পরিচয়ের সূত্রধরে হেলাল মুন্সি মামলার খরচের অজুহাতে বিভিন্ন কুটকৌশল করে আমার কাছ থেকে ১১-১২ লাখ হাতিয়ে নিয়েছেন। আমার জায়গার বিপরীতে সচিবালয় থেকে প্রপোজাল পাশ করিয়ে এনে দেবে জানিয়ে আরও টাকা নিয়েছে। সচিবালয়ে আবেদন করতে হবে বলে জানিয়ে কৌশলে ওই কাগজে আমার স্বাক্ষর নিয়ে আমাদের দখলীয় জমি হেলাল মুন্সি তাঁর স্ত্রীর নামে লিখে নিয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, হেলাল একজন প্রতারক লোক। তাঁর চরিত্র বুঝতে পেরে আমি তাঁর কাছে থাকা আমার মামলা চকরিয়া আদালতে এডভোকেট মঈন উদ্দিনের কাছে নিয়ে যাই। সেকারণে ক্ষুদ্ধ হয়ে হেলাল মুন্সি এখন বিএনপি নেতার দাপট দেখিয়ে আমাকে নানাভাবে হয়রানি করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। মিথ্যা মামলায় আসামি করে জেলে পাঠানোর হুমকি দিচ্ছে। আমি প্রশাসনের কাছে তাঁর বিচার চাই। আমরা নিরাপদে বসবাস করার নিশ্চয়তা চাই। 

জামাল উদ্দিনের স্ত্রী মোহছেনা বেগম বলেন, আমার স্বামী জেলে গেলে এলাকার একজন মামলা পরিচালনার মাধ্যমে আমার স্বামীকে জামিনের ব্যবস্থা করতে হেলাল মুন্সিকে দায়িত্ব দেন। যেখানে ২০০ টাকা দরকার, সেখানে হেলাল মুন্সি ২ হাজার টাকা নিয়েছে। হাইকোর্ট থেকে জামিন করতে ২০ হাজার টাকার কাজের স্থলে আমার কাছ থেকে ২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এভাবে হেলাল মুন্সি আমার পরিবারকে ফতুর করে দিয়েছে। 

স্থানীয় আক্তার হোসেনের স্ত্রী হালিমা বেগমসহ অনেকে বলেন, বিদুৎ সংযোগের মিটার এনে দেবার কথায় হেলাল মুন্সি আমাদের কাছে থেকে ৭ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। শুধুমাত্র মসজিদের মিটারটি দিয়েছে। আমাদের একটি মিটারও এনে দেয়নি, টাকাও ফেরত দেয়নি। 

মানববন্ধনে এলাকাবাসী জানিয়েছেন, আমরা চকরিয়া আদালতে মামলার হাজিরা দিতে যেতে ভয় পাচ্ছি। আদালতে গেলে হেলাল মুন্সি আমাদের গালিগালাজ করে। এখন একদিন দুইদিন পর রাতের বেলায় বহিরাগত লোকজন নিয়ে ভরাচর গ্রামে এসে আমাদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে দেবে বলে হুমকি দিয়ে টাকা দাবি করছে। আমরা তাঁর অত্যাচার ও জুলুমের শিকার। আমরা প্রশাসনের কাছে তাঁর উপযুক্ত বিচার চাই।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে হেলাল মুন্সির মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। একারণে তাঁর বক্তব্য ছাপানোর সুযোগ হয়নি।

0Shares