
কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলমের ১৮দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ বুধবার সকালে চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ারুল কবির তদন্তকারী কর্মকর্তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।
চকরিয়া আদালত সূত্র জানায়, জাফর আলম চকরিয়া থানার পাঁচটি ও পেকুয়া থানার দুটি মামলার আসামি। এরমধ্যে চকরিয়া থানার পাঁচটি মামলায় ১৪দিন ও পেকুয়া থানার দুটি মামলায় চারদিন রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। জাফর আলমকে আজ সকাল নয়টা ১০মিনিটে কাঠগড়ায় তোলা হয়। সাতটি মামলায় শুনানী শেষে নয়টা ৩৭ মিনিটে তাকে কাঠগড়া থেকে নামিয়ে কারাভ্যানে করে চকরিয়া থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিকে জাফর আলমকে চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আনার খবরে আজ সকাল সাড়ে নয়টা থেকে থানা রাস্তার মাথা এলাকায় জড়ো হতে থাকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা। সেখানে বিক্ষোভ মিছিল ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তাঁরা। সমাবেশে বক্তব্য দেন চকরিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এনামুল হক, চকরিয়া পৌরসভা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফখরুদ্দিন ফরায়জী। সমাবেশ থেকে জাফর আলমের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানানো হয়। অপরদিকে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে চকরিয়া পৌরসভার মগবাজার এলাকায় মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার ও হয়রানির প্রতিবাদে ঝটিকা মিছিল করেছে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। তাঁরা সেটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লাইভ সম্প্রচারও করেন। এতে নেতৃত্ব দেন চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন, খুটাখালী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম ও চকরিয়া পৌরসভা যুবলীগের নেতা এনামুল হক।
চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) মো. গোলাম সরওয়ার বলেন, চকরিয়া থানার চারটি ও পেকুয়া থানার দুটি হত্যা মামলা এবং চকরিয়া থানার একটি বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তারা বিভিন্ন মেয়াদে জাফর আলমের ২৪দিনের রিমান্ড চেয়েছিলেন। আদালত শুনানী শেষে এসব মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে ১৮দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পুলিশ পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন বলেন, জাফর আলমকে চকরিয়া আদালতে রিমান্ড শুনানীর জন্য তোলা উপলক্ষে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। আদালতের আশপাশে সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশ বিভিন্ন স্তরে কঠোর নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলে। সকালে বৃষ্টি থাকায় ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর পদক্ষেপের কারণে কোনো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।
আদালতের একটি সূত্র জানায়, নিরাপত্তা জনিত কারণে জাফর আলমকে বেলা ১১টায় আদালতে তোলার কথা থাকলেও তাকে কক্সবাজার কারাগার থেকে সকাল নয়টার দিকে চকরিয়া আদালতে নিয়ে আসা হয়। আধা ঘণ্টার মধ্যে শুনানি শেষে কঠোর নিরাপত্তায় তাকে চকরিয়া থানায় নেওয়া হয়।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ১৪দিনে রিমান্ডে সাবেক সংসদ সদস্য জাফর আলমকে চকরিয়া আদালত থেকে চকরিয়া থানায় আনা হয়েছে। রিমান্ড শেষ হলে তাকে চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হবে।