👤 নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া

কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভার মগবাজার এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ঝটিকা মিছিল করায় ২১ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে চকরিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সনজীব কুমার পাল বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। আসামিদের মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

মামলার আসামিদের মধ্যে চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন জয়নাল, চকরিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বেলাল উদ্দিন শান্ত, চকরিয়া উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিউল আজম, খুটাখালী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম মিটু, সাবেক সংসদ সদস্য জাফর আলমের ভাতিজা হাসান আল বসরী, চকরিয়া পৌরসভা যুবলীগের নেতা এনামুল হক মঞ্জু অন্যতম।

মামলার এজাহার ঘেঁটে দেখা যায়, গত ১৮ জুন সকালে চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জাফর আলমকে রিমান্ড শুনানীর জন্য চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত সাত মামলায় জাফর আলমের ১৮দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ওই দিন সকাল ১০টা ১০ মিনিটে চকরিয়া পৌরসভার মগবাজার এলাকায় জাফর আলমকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে দাবি করে আওয়ামী লীগের কিছু নেতা-কর্মী বিক্ষোভ মিছিল করেন। তাঁরা 'জাফর আলমের হুলিয়া, নিতে হবে তুলিয়া' 'জাফর আলমের মুক্তি চাই, দিতে হবে'সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন। খবর পেয়ে ১০টা ২০ মিনিটে চকরিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সটকে পড়েন।

মামলার এজাহারে পুলিশ দাবি করে, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের সদস্যপদ গ্রহণ ও সমর্থন করে, অপরাধ সংঘঠনের ষড়যন্ত্রসহ প্রচেষ্টা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্ররোচনাসহ সহায়তা করে সন্ত্রাস বিরোধী আইন ২০০৯ (সংশোধনী ২০১৩) এর ৮/৯/১০/১১/১২/১৩ ধারায় অপরাধ করেছে।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, সন্ত্রাস বিরোধী আইনে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ২১ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে। আসামিদের মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারে পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালাচ্ছে।

গত বুধবার সকালে সাবেক সংসদ সদস্য জাফর আলমকে আদালতে তোলার পর মগবাজার এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা যে মিছিল করেছে এরপর কক্সবাজার জেলা জুড়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ধরতে সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করা হয়।

কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, বুধবার রাতে পুলিশ কক্সবাজারের বিভিন্ন উপজেলায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে আওয়ামী লীগের ৫৫জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এরমধ্যে চকরিয়ায় ১৬জন ও পেকুয়ায় ১১জন নেতা-কর্মী রয়েছে। তাঁদের গতকাল বৃহস্পতিবার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।