👤 নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া
কক্সবাজারের চকরিয়ায় চুরির মামলায় যুবককে গ্রেপ্তারের পর জানা যায় সেই যুবকই পুলিশ সদস্যের স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনার সঙ্গে জড়িত। গত বুধবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে চকরিয়া পৌর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার যুবকের নাম মো. পারভেজ ওরফে আবুল কালাম (৩৯)। তিনি চকরিয়া পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মগবাজার খামারপাড়া এলাকার মৃত মেহের আলীর ছেলে। বর্তমানে বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ইয়াংছা বাজারের মেম্বার পাড়া এলাকায় বসবাস করছেন তিনি।
পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার যুবক পারভেজের বিরুদ্ধে চুরি-ছিনতাইয়ের অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে। একটি চুরির মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হলে পুলিশ সদস্যের ঘরে ঢুকে স্ত্রীকে ধর্ষণের বিষয়টি উঠে আসে। পরে ঘটনাস্থলের আশপাশের ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা যাচাই ও গ্রেপ্তার যুবকের লাস্ট কল লোকেশন সংগ্রহ করে দেখা যায়, গ্রেপ্তার যুবকই ধর্ষণ ও চুরির ঘটনাটি ঘটিয়েছেন। পরে ভুক্তভোগী নারী থানায় গিয়ে ওই যুবককে সনাক্ত করেন।
পুলিশ জানায়, ট্যুরিস্ট পুলিশের এক পুলিশ সদস্য স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বাসা ভাড়া করে চকরিয়া পৌরসভার সিকদারপাড়া এলাকায় থাকেন। গত সোমবার দিবাগত রাতে ওই পুলিশ সদস্য কর্মস্থলে থাকার সুযোগে বসতঘরে ঢুকে গ্রেপ্তার যুবক মো. পারভেজ দুটি মুঠোফোন ও আড়াই হাজার টাকা চুরির পর ঘরে থাকা পুলিশ সদস্যের স্ত্রীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন।
পুলিশ জানায়, সোমবার দিবাগত রাত সোয়া তিনটার দিকে পুলিশ সদস্যের বাসার রান্নাঘরের জানালা দিয়ে একটি বাঁশের সাহায্যে কৌশলে মূল দরজার সিটকিনি খুলে ঘরে প্রবেশ করেন মুখোশপরা পারভেজ। ঘরে ঢুকেই পুলিশ সদস্যের স্ত্রীকে জিম্মি করে দুটো মুঠোফোন ও আড়াই হাজার নগদ টাকা ছিনিয়ে নেন। ওই সময় 'আর কি আছে বের করে দে' বলে হুমকি দিতে থাকেন তিনি। তাঁর হুমকিতে ঘরে থাকা দুই শিশু সন্তান আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে কাঁদতে থাকে। একপর্যায়ে শিশু সন্তানদের শোবার ঘরে আটকে রেখে পুলিশ সদস্যের স্ত্রীকে টেনে হিঁচড়ে রান্নাঘরে নিয়ে যান। সেখানে লম্বা দা দিয়ে ভয় দেখিয়ে পুলিশ সদস্যের স্ত্রীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করা হয়। ধর্ষণ শেষে ওই যুবক মুঠোফোন ও টাকা নিয়ে মূল দরজা দিয়ে চলে যান।
চকরিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) অভিজিত দাস বলেন, পারভেজকে একটি চুরি মামলায় গ্রেপ্তারের পর পুলিশ সদস্যের বসতঘরে চুরি ও ধর্ষণের বিষয়টি উঠে আসে। পরে ভুক্তভোগী নারী পারভেজকে সনাক্ত করেন। পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে দেখা যায় পারভেজই চুরি ও ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটিয়েছেন।
এএসপি অভিজিত দাস বলেন, আগের একটি চুরির মামলায় তাকে বৃহস্পতিবার দুপুর দুইটার দিকে চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয়। আদালতে তাকে ধর্ষণসহ চুরির মামলায় শ্যুন এরেস্ট দেখানোর আবেদন করা হয়। আদালত সিদ্ধান্ত দিলে অধিকতর তথ্যের জন্য তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।