👤 রাজু দাশ, চকরিয়া
কক্সবাজার জেলার চকরিয়ায় সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারি দুর্জয় চৌধুরীর থানা হাজতে মৃত্যুর ঘটনার চারদিন পার হলেও এখনো মামলা হয়নি। এ মৃত্যুর ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে ফেস্টুন হাতে নিয়ে মানববন্ধন করেছে নিহতের স্বজন ও সনাতনী সম্প্রদায়ের লোকজন।
মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে থানার সামনে শতাধিক সনাতনী সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষের উপস্থিতিতে এ মানববন্ধন হয়।
এসময় মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, চকরিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারি দুর্জয় চৌধুরীর থানাহাজতে মৃত্যুর চারদিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। আটক করা হয়নি স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খানমকে। উদ্ধার হয়নি দুর্জয় চৌধুরীর ব্যবহৃত ল্যাপটপ। যার কারণে ক্ষোভ বাড়ছে সাধারণ মানুষদের মাঝে। দ্রত স্কুলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকসহ প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
মানববন্ধনে চকরিয়া সার্বজনীন কেন্দ্রীয় কালী মন্দির উন্নয়ন কমিটির সভাপতি ছোটন দাশ গুপ্ত বলেন, দুর্জয় চৌধুরীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যাকারীসহ এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
দুর্জয় চৌধুরীর বাবা কমল চৌধুরী আক্ষেপ নিয়ে বলেন, তাঁর ছেলে বেশ কিছুদিন ধরে যাবত শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। ২ লাখ ৮৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলে আমার ছেলেকে পুলিশের হাতে তুলে দেন প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খানম। এরপর পুলিশ-শিক্ষক মিলে আমার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। আমার ছেলে হত্যার সুষ্ঠ বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, ওই স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক ও বর্তমান প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খানমের স্কুলের দুর্নীতির সমস্ত ডকুমেন্ট আমার ছেলের ল্যাপটপে আছে। আমার ছেলে উপজেলার মধ্যে সেরা কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে সনদ পেয়েছে। আমার ছেলের ল্যাপটপে এমন কিছু তথ্য ছিল, যা ফাঁস করে দেবে ভেবে দুর্জয়কে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করানো হয়েছে। আমার ছেলের ওই ল্যাপটপটির এখনো হদিস দিতে পারেনি পুলিশ।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল আনোয়ার বলেন, নিহত দুর্জয় চৌধুরী বাবা কমল চৌধুরী বাদী হয়ে একটি এজাহার দায়ের করেছেন। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সব কিছু বিশ্লেষন করে মামলা রুজু করা হবে।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চকরিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খানম অফিস সহকারি দুর্জয় চৌধুরী চেক জালিয়াতি করে ও নগদে প্রতিষ্টানের ২ লাখ ৮৩ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন মর্মে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে দুর্জয় চৌধুরীকে থানাহাজতে আটকে রাখে পুলিশ। এদিন ভোর চারটার দিকে থানাহাজতে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় দুর্জয়ের মরদেহ ঝুলতে দেখা যায়।