
পেকুয়া আদর্শ মহিলা দাখিল মাদ্রাসায় হামলার শিকার হয়েছেন স্থানীয় দুই সংবাদ কর্মী। গতকাল সোমবার বেলা ১১টার দিকে ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনী তথ্য সংগ্রহে গেলে তাঁরা এই হামলার শিকার হন।
হামলার শিকার সংবাদ কর্মীরা হলেন ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক আমার বার্তার পেকুয়া প্রতিনিধি মো. আরকান ও কক্সবাজার থেকে প্রকাশিত দৈনিক আজকের কক্সবাজার পত্রিকার পেকুয়া প্রতিনিধি রাকিবুল ইসলাম। তাঁদের অভিযোগ, শিক্ষকদের যৌথ হামলার শিকার হন তাঁরা। একধরণের মব তৈরি করে তাঁদের ওপর হামলা হয়।
সংবাদ কর্মীরা বলেন, ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন নিয়ে নানা ছলচাতুরী করা হচ্ছে এমন সংবাদ পেয়ে আমরা বেলা ১১ টার দিকে মাদ্রাসায় যাই। আজ ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন, কিন্তু নির্বাচনী কোনো পরিবেশ নেই কেন? এমন প্রশ্ন শুনে চেতে উঠেন মাদ্রাসাটির সুপার ও সহসুপার। উত্তেজিত হওয়ার কারণ জানতে চেয়ে ভিডিও করতে চাইলে একপর্যায়ে সহসুপার মনিরুল ইসলাম সংবাদকর্মী মো. আরকানের হাতে থাকা মুঠোফোন ছিনিয়ে নেন। এসময় প্যান্টের পকেট থেকে আরকান আরেকটি মুঠোফোন বের করলে সেটি থাপ্পড় দিয়ে কেড়ে নিয়ে মাটিতে আছাড় দিয়ে ফেলে দেন। সহসুপার মনিরুল ক্রমেই পরিস্থিতি জটিল করে তুললে সংবাদকর্মীরা বের হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় মনিরুল ও তাঁর সহযোহীরা ওই দুই সংবাদকর্মীকে একটি কক্ষে আটকে রাখেন। একপর্যায়ে কক্ষটি থেকে বের হতে পারলেও মাদ্রাসার বারান্দায় সহসুপার ও তাঁর সহযোগীরা মিলে মব তৈরি করে হামলা চালায়।
ঘটনার পর ওই দুই সংবাদকর্মী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে একাডেমিক সুপারভাইজার উলফাত জাহানকে বিষয়টি অবগত করেন। পরে পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, পেকুয়া আদর্শ মহিলা দাখিল মাদ্রাসায় সভাপতি হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করছেন মাওলানা কামাল হোসেন। তাঁর বিরুদ্ধে মাদ্রাসার নিয়োগ বাণিজ্য, আর্থিক অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ রয়েছে। গত নির্বাচনে তাঁর মনোনীত প্রার্থীদের নিয়োগ নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক উঠেছিল। আর এ কারণে সংবাদকর্মীরা নির্বাচন সংক্রান্ত তথ্য জানতে গেলে তাদের বাধা দেয়ার ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
মাদ্রাসাটির সহসসুপার মনিরুলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায় নি। তবে পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সিরাজুল মোস্তফা বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপূর্বক পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।