👤 ডেস্ক রিপোর্ট
স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণ কিংবা বন্দর সংক্রান্ত যেকোনো দীর্ঘমেয়াদি সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার কেবল জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকারেরই থাকে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, কোনো নির্বাচনি ম্যান্ডেটবিহীন সরকারের হাতে এ ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা নেই।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণ কেবল একটি আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া নয়; এটি কোটি মানুষের জীবনে প্রতিদিনের অর্থনৈতিক বাস্তবতাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত দীর্ঘ এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান উদাহরণ টেনে লিখেছেন—গাজীপুরের একটি ছোট পোশাক কারখানার মালিক কিংবা নারায়ণগঞ্জের এক শ্রমজীবী পরিবার কীভাবে নীরবে বড় সংকটে পড়ে যায়, যখন হঠাৎ করে শুল্ক সুবিধা বাতিল হয় বা রপ্তানিতে চাপ তৈরি হয়। তারা কেউ এ সিদ্ধান্তে ভোট দেয়নি, কাউকে জিজ্ঞাসাও করা হয়নি
তিনি বলেন, বিএনপি আগেও জানিয়েছিল—২০২৬ সালের এলডিসি উত্তরণের সময়সূচি ধরে এগোলেও সময় স্থগিতের বিকল্প না রাখা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। ইতিহাস প্রমাণ করে—অ্যাঙ্গোলা ও সামোয়ার মতো দেশ সময়সূচি পরিবর্তনের সুযোগ পেয়েছে। জাতিসংঘের নিয়মেও অর্থনৈতিক ধাক্কা এলে সময় বাড়ানোর ব্যবস্থা রয়েছে। তাই অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত হতো দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে কিছু সময় চাওয়া।
তারেক রহমান অভিযোগ করেন, সরকার জন-আলোচনাকে গুরুত্ব না দিয়ে কৌশলগত বিকল্পগুলো বন্ধ করে দিচ্ছে, ফলে আন্তর্জাতিক আলোচনায় বাংলাদেশের অবস্থান দুর্বল হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকার নিজ নথিপত্রেই স্বীকার করেছে—ব্যাংকিং খাতের চাপ, বৈদেশিক মুদ্রার সংকট, ঋণ ঝুঁকি বৃদ্ধি ও রপ্তানির চাপ ব্যবসায়ীদের তীব্রভাবে প্রভাবিত করছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের দীর্ঘমেয়াদি সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। তার মতে, দেশের সবচেয়ে কৌশলগত সম্পদ নিয়ে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার কোনো অন্তর্বর্তী সরকারের নেই। তিনি বলেন, এটা কোনো ব্যক্তিকে আক্রমণ নয়; এটা রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান ও নীতি রক্ষার প্রশ্ন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উত্তরণ করবে, বন্দর সংস্কারও হবে; কিন্তু এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত সেই সরকারের, যে জনগণের ভোটে নির্বাচিত ও তাদের কাছে জবাবদিহিমূলক।
তারেক রহমান মনে করেন, বাংলাদেশের মানুষ কখনোই নিজের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে নিষ্ক্রিয় নয়। তারা অংশগ্রহণ, মর্যাদা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকার চায়। তাই অনেকে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছেন, যেখানে জনগণই দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে।