
শুরুতে ছয় পৃষ্ঠার লিখিত বক্তব্য। এরপর চলল প্রায় আধঘণ্টার প্রশ্ন-উত্তর পর্ব। মিরপুরে সিসিডিএমের পুরো সংবাদ সম্মেলনে ঢাকার ক্লাব ক্রিকেট বর্জন করা দলগুলোর কাছে যেমন ছিল অনুরোধ, তেমনি খেলতে না এলে ছিল ‘কঠোর ব্যবস্থা’ নেওয়ার হুঁশিয়ারিও।
বিসিবি নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই ক্লাবগুলোর একটি অংশের সঙ্গে বোর্ডের এই দ্বন্দ্বের শুরু। তখন ‘বিদ্রোহী’ পক্ষটির নেতৃত্বে ছিলেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল। শুরুতে ক্লাবগুলো যখন না খেলার ঘোষণা দেয়, তামিমও ছিলেন তাদের দলে। তবে পরে সেই অবস্থান থেকে সরে এসেছে তামিমেরই ক্লাব ওল্ড ডিওএইচএস। প্রথম বিভাগ ক্রিকেটের জন্য তারা দলবদল সেরে ফেলেছে।তামিমের এমন সিদ্ধান্তকে বেশ ইতিবাচকভাবে নিয়েছে বিসিবি। আজ তাঁকে রীতিমতো ‘স্যালুট’ জানানো হয়েছে।
বিসিবি সহসভাপতি ফারুক আহমেদ এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, ‘ক্রিকেট মাঠে খেলাটা আপনারা চালিয়ে যেতে দিয়েন। বারবার বলছি, (খেলা না থাকলে) ক্ষতিটা হবে শুধু ক্রিকেটার এবং বাংলাদেশ ক্রিকেটের। তারা ছাড়া খুব বেশি মানুষের কিন্তু ক্ষতি হবে না।’
ক্লাব ক্রিকেট না হলে বিসিবি বিকল্প টুর্নামেন্ট করবে জানিয়ে ফারুক আহমেদ বলেন, ‘ক্লাব ক্রিকেটটা হলো না। তখনো কিন্তু টুর্নামেন্ট হবে। মানে কিছু একটা বোর্ড তো বের করবে যেন ছেলেগুলোকে মাঠে রাখা যায়।’
১৮ নভেম্বর প্রথম বিভাগ ক্রিকেট দিয়ে শুরু হওয়ার কথা ছিল এবারের মৌসুম। ৪৫টি ক্লাব বিসিবির বর্তমান পরিচালনা পর্ষদকে ‘অবৈধ’ দাবি করেছে, তাদের মধ্যে প্রথম বিভাগের ৮টি ক্লাব দলবদলই করেনি। পরে ১১ ডিসেম্বর লিগ শুরুর নতুন দিনক্ষণ ঠিক করা হয়। এরপর আরও তিন দিন পিছিয়ে ১৪ ডিসেম্বর থেকে লিগ আয়োজনে বোর্ড ‘বদ্ধপরিকর’ বলে জানিয়েছে সিসিডিএম।
সেখানে কোনো ক্লাব না এলে নিয়ম অনুযায়ী অবনমিত হয়ে যাবে বলেও জানানো হয়েছে সিসিডিএমের সংবাদ সম্মেলনে। এখন পর্যন্ত বিসিবিকে আনুষ্ঠানিকভাবে না খেলার কথা কোনো ক্লাব জানায়নি বলে দাবি সিসিডিএম প্রধান আদনান রহমানের। ২০টি ক্লাব খেলবে ধরেই আগামীকাল সূচি ঘোষণার কথা রয়েছে বিসিবির।
খেলতে না এলে বাইলজ ও প্লেয়িং কন্ডিশন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে বিসিবি। এর আগে নভেম্বরের শুরুতে বিসিবির দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আসন্ন মৌসুমে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেটে কোনো দল লিগে অংশ না নিলে বা লিগ চলাকালে মাঝপথে সরে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে দলটিকে লিগে অযোগ্য ঘোষণা করা হবে এবং অবনমিত করা হবে।
শেষ পর্যন্ত ক্লাবগুলো না খেললে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে ক্রিকেটারদের। বিসিবি জানিয়েছে, সে ক্ষেত্রে আর্থিকভাবে তাঁদের পাশে দাঁড়ানো হবে। তবে ক্রিকেটারদের জন্য সবচেয়ে বড় চাওয়া মাঠের ক্রিকেট।
সেটি নিশ্চিত করতে বিসিবি নতুন টুর্নামেন্ট আয়োজনের উদ্যোগ নেবে। বিসিবির সহসভাপতি ফারুক আহমেদ যেমন বললেন, ‘বোর্ড চিন্তা করবে, যদি খেলা না হয়, তাহলে আমরা কী করতে পারি। আমাদের খেলা মাঠে আনতে হবে। তখন বিজয় দিবস ক্রিকেট বা বিভিন্ন সংস্করণের ক্রিকেট হবে। যেন খেলোয়াড়েরা খেলতে পারে।’




