👤 কুতুবদিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের অভিযোগে কক্সবাজারের কুতুবদিয়ার ২৪ জনসহ ৩৫ জেলেকে আটক করেছে সেই দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরে, আটককৃত জেলেদের ওই দেশের কাকদ্বীপ মহকুমা আদালতের মাধ্যমে একটি জেল হাজতে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবারগুলো।
আটককৃতরা হলেন, কুতুবদিয়া উপজেলার বড়ঘোপ ইউনিয়নের এখলাছ মিয়ার পুত্র মো. আবু তাহের, মো. ইসমাইলের পুত্র আজম উদ্দিন, আবু তাহেরের পুত্র মুহাম্মদ রিমন, জসিম উদ্দিনের পুত্র মোহাম্মদ শাকিল আহমেদ, নাজির হোসেনের পুত্র নুরুল হুদা, নজির আহমেদের পুত্র ছলিম উল্লাহ, মোস্তাক আহামদের পুত্র আব্দুল মান্নান, বাহার মিয়ার পুত্র রিদুওয়ানুল হক, আব্দুর রহিমের পুত্র মেহেদী হাসান কুতুবী, ছৈয়দ উল্লাহর পুত্র মো. সোহেল, মো. আলমের পুত্র আজিজুর রহমান, মুছা আলীর পুত্র মোহাম্মদ জাফর আলম, ছদর আমিনের পুত্র মো. হেনাগ, শমশু আলমের পুত্র নেজাম উদ্দিন, রমজান আলীর পুত্র মোহাম্মদ আমজাত হোসেন, বেলাল হোসেনের পুত্র শাহাদাত হোসেন , বেলাল হোসেনের পুত্র আখেরাত হোছাইন, জামাল উদ্দিনের পুত্র নাছির উদ্দীন, একই উপজেলার আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের রাহমত উল্লাহর পুত্র মোহাম্মদ শাকিব, পুলিন জলদাসের পুত্র কাঞ্চন জলদাস, মৃত আলী আহমেদের পুত্র আব্দুল মালেক, আব্দুস সালামের পুত্র ছৈয়দ আলম, শামসুল আলমের পুত্র মোহাম্মদ আবু বক্কর, আব্দু রবের পুত্র আলমগীরসহ ২৪ জেলেরা একই ট্রলারে ছিলেন।
জানা যায়, রবিবার কুতুবদিয়া উপজেলার বড়ঘোপ ইউনিয়নের পূর্ব মুরালিয়া এলাকার মো. জসিম উদ্দিনের মালিকানাধীন এম. ভি রূপসী সোলতানা নামের একটি ফিশিং ট্রলার নিয়ে সাগরে মাছ শিকারে যায়। মঙ্গলবার সকালে গন্তব্য স্থানে পৌছলে ফিশিং ট্রলারটি নোঙর করে। ওই রাতে ফিশিং ট্রলারের ইঞ্জিন বিকল হয় এবং নোঙর ছিড়ে কুয়াশায় বিভ্রান্ত হয়ে ভারতীয় সাগর সীমানায় ডুকে পড়ে ২৪ জন জেলে। এসময় ইঞ্জিনটি মেরামতের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন তারা। পরে, মাঝরাতে ভারতীয় কোস্ট গার্ড ট্রলারসহ জেলেদের আটক করে ফ্রেজারগঞ্জ উপকূলীয় পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। বৃহস্পতিবার দুপুরে কাকদ্বীপ মহকুমা আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে জেল হেফাজতে পাঠানো হয়।
স্থানীয় সালেহ আহমেদ জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রলারমালিক মো. জসিম উদ্দিন তার ফিশিং ট্রলারটি ভারতীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটকের ভিডিও দেখে তিনি অজ্ঞান হয়ে ঢলে পড়ে। পরে, স্থানীয়রা উদ্ধার করে কুতুবদিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। তবে, আটক জেলেদেরকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানান ট্রলার মালিকের পুত্র তারেক জিয়া।
এবিষয়ে কুতুবদিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুল হক জানান, ভারতে ২৪ জেলে আটকের বিষয়ে অবগত আছেন। ইতোমধ্যে ট্রলার মালিকপক্ষ বিষয়টি নিয়ে থানায় এসেছেন বলে জানান।
এদিকে, সাগরে সীমানা নির্ধারণে কোন চিহ্ন না থাকায় জেলেদের অজান্তে ভারতীয় সাগর সীমানায় ডুকে পড়ে। ফলে, ভারতীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হচ্ছেন কুতুবদিয়ার জেলেরা। এই সমস্যা সমাধানে সাগর সীমানায় কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর নিয়োজিত জাহাজের মাধ্যমে জেলেদের সর্তকতা করতে টহল জোরদার করার দাবি করেছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
উল্লেখ্য, গত বুধবার দিবাগত রাতে কুতুবদিয়ার এফভি. রূপসী সোলতানা ও পটুয়াখালীর এফভি. সাবরিনা নামের দুই ট্রলারে ৩৫ জন জেলেকে আটক ভারতীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এরআগে একই অপরাধে কুতুবদিয়ার আরও ৫৬ জন জেলে ভারতীয় জেল হাজতে রয়েছে।