Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

নিখোঁজের ২০ দিন পর পেকুয়া থেকে অটোরিকশা চালকের লাশ উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক:
নিখোঁজের ২০ দিন পর কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া জি.সি স্টিমার ঘাটের পাশে মাতামুহুরী নদীর চর থেকে গতকাল সোমবার দুপুর ১২টায় গিয়াস উদ্দিন (৫৫) নামের এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এর আগে গত ৯ আগস্ট চকরিয়া উপজেলার জিদ্দাবাজার থেকে তিনি নিখোঁজ হন।

গিয়াস উদ্দিন চকরিয়া পৌরসভার হালকাকারা গ্রামের মৃত ফজলুল করিমের ছেলে। তাঁর বর্তমান বসতি উপজেলার কাকারা ইউনিয়নের শাহ ওমর নগর এলাকায়। গিয়াস উদ্দিন পেশায় ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার চালক।

গিয়াস উদ্দিনের পরিবার দাবি করছে, গিয়াস উদ্দিনকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। লাশ ভাটির টানে যেতে যেতে পেকুয়ার উজানটিয়ার চরে গিয়ে আটকে গেছে।

স্থানীয় লোকজন, পরিবার ও চকরিয়া থানা পুলিশ সূত্র জানায়, টানা বর্ষণের ফলে ৬ আগস্ট রাত থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত চকরিয়ায় বন্যা হয়। এই বন্যায় রাস্তাঘাট ও ঘরবাড়ি ডুবে যায়। বন্যার পানিতে মাছ ধরে ৯ আগস্ট দুপুরে চকরিয়ার জিদ্দাবাজার এলাকায় বিক্রি করতে যান গিয়াস উদ্দিন। মাছ বিক্রির পর তিনি আর ঘরে ফেরেননি।

গিয়াস উদ্দিনের ছেলে মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বসতবাড়ির সীমানা নিয়ে নাছির উদ্দিনের সঙ্গে দুই বছর আগে বিরোধ হয়। এরপর দু’পক্ষ ভালোও হয়ে যান। ৯ আগস্ট মাছ বিক্রির পর আমরা বাবাকে খুঁজে না পেলেও নাছির উদ্দিন বাবাকে নিয়ে লামার ফাইতংয়ের পাহাড়ে যান। পাহাড়ের নারীরা বাবাকে নাছিরের সঙ্গে দেখার সেই সাক্ষ্য পুলিশকে দিয়েছেও।

মিজানুর বলেন, ১১ আগস্ট বিকেলে আমার মা মনোয়ারা বেগম বাবাকে অপহরণের অভিযোগ দেন চকরিয়া থানায়। ১২ আগস্ট নাছির উদ্দিনকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় আটক করে পুলিশ। তবে একদিন পর কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি বলে পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়। পরে ২৩ আগস্ট চকরিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি করে ২৪ আগস্ট নাছির উদ্দিনের বিরুদ্ধে চকরিয়া জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অপরণের অভিযোগে মামলা করা হয়।

গিয়াস উদ্দিনের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম বলেন, তাঁর স্বামীকে হত্যা করে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে। তিনি তাঁর স্বামী হত্যার বিচার চান। তাঁর সন্দেহ, গিয়াস উদ্দিন ২০ দিন ধরে নিখোঁজ থাকলেও লাশের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে তাকে সপ্তাহ খানেক আগে হত্যা করে নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে নাছির উদ্দিনের বক্তব্য জানতে বিভিন্নভাবে চেষ্টা করা হয়। মুঠোফোন বন্ধ, বাড়িতে তিনি নেই-একারণে তাঁর বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

লাশ উদ্ধারের পর সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন পেকুয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ ইব্রাহিম। তিনি বলেন, গতকাল সোমবার সকালে খবর পাওয়ার পর প্রথমে আমরা অজ্ঞাত পরিচয়ের লাশটি নদীর চর থেকে উদ্ধার করি। পরে চকরিয়া উপজেলার কাকারার শাহ ওমর নগর এলাকার মনোয়ারা বেগম লাশটি তাঁর স্বামী গিয়াস উদ্দিনের বলে সনাক্ত করেন।

এসআই ইব্রাহিম বলেন, অন্তত ৭-১০ দিন আগে গিয়াস উদ্দিনের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাঁর অন্ডকোষ নেই। শরীরও বিকৃত হয়ে গেছে। এজন্য সুনির্দিষ্টভাবে কোথাও আঘাতের চিহ্ন আছে কিনা বুঝা যাচ্ছে না। তবে এই লাশ সংক্রান্ত পরবর্তী আইনী পদক্ষেপ নেবে চকরিয়া থানার পুলিশ।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, নিহতের পরিবার যদি হত্যা দাবি করে তাহলে হত্যা মামলা দিলে আমরা নেবো। আবার আদালতে যেটি নালিশী দরখাস্ত দিয়েছে সেখানেও হত্যার ধারা যুক্ত করা যাবে। মূলত অভিযোগ প্রাপ্তি সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

0Shares