দুই মাস ধরে বেতন-ভাতা না পেয়ে কক্সবাজারের পেকুয়া সরকারি মডেল জিএমসি ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক জহির উদ্দিনকে ছুরি নিয়ে মারতে গেলেন বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির এক কর্মচারি। এ ঘটনায় কর্মচারি হারুন অর রশিদ ওরফে নাছির উদ্দিন আহত হয়ে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
জিএমসি ইনস্টিটিউশনের শিক্ষক-কর্মচারিরা জানিয়েছেন, বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারি (দপ্তরি) হারুন অর রশিদের বেতন-ভাতা গত দুই মাস ধরে বন্ধ করে রেখেছেন প্রধান শিক্ষক জহির উদ্দিন। নিয়মিত বেতন-ভাতা না পেয়ে হারুন অর রশিদ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পূর্বিতা চাকমার কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। এ ঘটনার জের ধরে হারুন অর রশিদ ও প্রধান শিক্ষক জহির উদ্দিনের মধ্যে হাতাহাতি ও ছুরিকাঘাতে ঘটনা ঘটে। ছুরিকাঘাতে হারুনের ডান হাতের একটি আঙ্গুল কেটে যায়।
ঘটনার পুরোটা ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায় ধরা পড়ে। এতে দেখা যায়, কর্মচারি হারুন অর রশিদ প্রধান শিক্ষক জহির উদ্দিনের কক্ষে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন। ওই সময় প্রধান শিক্ষক জহির উদ্দিন নিজের চেয়ারে বসা ছিলেন। হারুন তাঁর কাছাকাছি গিয়ে কোমর থেকে একটি ছুরি বের করেন। এসময় জহির উদ্দিন চেয়ার থেকে উঠে তাকে চেপে ধরেন। একপর্যায়ে দুজনে মেঝেতে গড়াগড়ি দেন। আট মিনিট পর জহির উদ্দিন কর্মচারি হারুনের কাছ থেকে ছুরিটি ছিনিয়ে নিতে সক্ষম হন এবং দরজা খুলে দৌঁড়ে পালিয়ে যান।
তবে আহত কর্মচারি হারুন অর রশিদ সাংবাদিকদের বলেন, জহির উদ্দিন প্রধান শিক্ষক হওয়ার পর থেকে আমার বেতন-ভাতা দিতে গড়িমসি করেন। একপর্যায়ে বেতন-ভাতা নির্বিঘœ করতে তাকে নয় হাজার টাকা ঘুষ দিই। এতেও তিনি ক্ষান্ত হননি। আবারও ১০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। সেই ঘুষ না দেওয়ায় গত ৯ অক্টোবর আমার মাসিক বেতন ও যাবতীয় ভাতা বন্ধ করতে বিদ্যালয়ের ক্যাশিয়ারকে নির্দেশ দেন প্রধান শিক্ষক। এবিষয়ে আমি গত ১২ অক্টোবর পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিই। এরপর থেকে হাঁটতে-বসতে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন প্রধান শিক্ষক। এতে তাঁর রাগ উঠলে তিনি ছুরি নিয়ে প্রধান শিক্ষককে ভয় দেখাতে যান।
জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক জহির উদ্দিন বলেন, ‘ওই কর্মচারি আমাকে মারতে ছুরি নিয়ে আমার কক্ষে ঢুকেন। এসময় দুইজনের মধ্যে হাতাহাতি হয়। হাতাহাতিতে দুইজনই আঘাতপ্রাপ্ত হই।’
পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পূর্বিতা চাকমার মুঠোফোনে ফোন করা হলেও তাঁর মুঠোফোনে সংযোগ পাওয়া যায়নি।