পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত বাংলাদেশি যুবক আইনুল হকের (৩২) লাশ তিন দিন পর ফেরত দিয়েছে ভারত। আজ শনিবার বিকেলে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের শূন্যরেখায় তেঁতুলিয়া মডেল থানা-পুলিশের কাছে লাশটি হস্তান্তর করে ভারতের ফাঁসি দেওয়া থানা-পুলিশ। পরে তেঁতুলিয়া থানা-পুলিশ নিহত আইনুল হকের স্বজনদের কাছে লাশটি হস্তান্তর করে।
লাশ হস্তান্তরের সময় বিএসএফ ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্য, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও নিহত আইনুল হকের স্বজনেরা উপস্থিত ছিলেন। তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাঈদ চৌধুরী লাশ হস্তান্তরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত আইনুল বাংলাবান্ধা ইউনিয়নের দক্ষিণ কাশিমগঞ্জ এলাকার আকবর আলীর ছেলে। তাঁর দুই স্ত্রী ও তিন ছেলেমেয়ে আছে। তিনি ভারতীয় গরু চোরাকারবারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা ইউনিয়নের গোয়ালগছ সীমান্তের ৪৪৮ নম্বর সীমান্তখুঁটি এলাকায় মহানন্দা নদীর পাড়ে ভারতীয় ভূখণ্ডে বিএসএফের গুলিতে নিহত হন আইনুল হক। পরদিন বিকেলে বিএসএফ লাশটি উদ্ধার করে ভারতের ফাঁসি দেওয়া থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। এরপর বুধ ও বৃহস্পতিবার বিজিবির সঙ্গে দুই দফা পতাকা বৈঠকে গুলিতে ওই যুবকের মৃত্যুর বিষয়টি স্বীকার করে বিএসএফ। তখন পুলিশ ও হাসপাতালের কার্যক্রম শেষে লাশ ফেরত দেওয়ার কথা জানিয়েছিল বিএসএফ।
বিজিবি ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আইনুল হক গরু পারাপারের জন্য ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছিলেন। গত বুধবার সকালে স্থানীয়দের মাধ্যমে ওই যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ পড়ে থাকার খবর পায় তাঁর পরিবার। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে তাঁরা ঘটনাটি বিজিবিকে জানান। পরে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠকের আহ্বান করে বিজিবি। ওই দিন বিকেলে বিএসএফ সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে লাশটি উদ্ধার করে ভারতীয় পুলিশের মাধ্যমে ময়নাতদন্তে পাঠায়।
নিহত আইনুল হকের মামাতো ভাই শাহজাহান আলী বলেন, ‘বিকেলে পুলিশ আমাদের কাছে আইনুলের লাশ হস্তান্তর করার পরপরই বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে। মাগরিবের নামাজের পর (সন্ধ্যায়) দক্ষিণ কাশিমগঞ্জ এলাকায় পারিবারিক কবরস্থানে তাঁর লাশ দাফন করা হয়েছে।’
বাংলাবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কুদরত-ই-খুদা বলেন, সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত আইনুলের লাশ তিন দিন পর আজ হস্তান্তর করেছে ভারতের ফাঁসি দেওয়া থানা-পুলিশ। এ সময় বিজিবি-বিএসএফের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সন্ধ্যায় নিহত আইনুল হকের লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।