কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার পোকখালী ইউনিয়নের উত্তর গোমাতলী রাজঘাট পাড়ার মানুষ আসলেই জনমদুঃখী কপাল পোড়া। একমাত্র সড়কের কারনে অর্ধকোটি টাকার জেটিঘাট বর্তমানে অকেজো অবস্থায় রয়েছে। এ পাড়ার ৬ বীর মুক্তিযোদ্ধার গ্রামের সড়কের বেহাল দশা যেন দেখার কেউ নেই।
গ্রামের একমাত্র সড়কটির বিভিন্ন স্থানে ইট-মাটি সরে গিয়ে চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। গাড়ি চলাচল তো দূরের কথা, পায়ে হেঁটে চলাফেরা করতে গিয়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। জনগুরুত্বত্বপূর্ণ হওয়ার কারণে প্রতিনিয়ত এ সড়ক দিয়ে কয়েক হাজার মানুষ চলাচল করে।
সরেজমিন দেখা গেছে, পোকখালী ইউনিয়নের উত্তর গোমাতলী, গাইট্যাখালী, আজিমপাড়া, রাজঘাট ও চরপাড়া গ্রামের মানুষ ঈদগাঁও উপজেলা সদর এবং বাজারের যাতায়তের একমাত্র সড়ক হওয়ার কারণে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়ত করতে হচ্ছে। এলাকার মানুষের দ্রুত চলাচলের একমাত্র বাহন সিএনজি, মোটরসাইকেল, অটোরিকশা ও টমটম হলেও বর্তমানে তাও চলে না।
স্থানীয় লোকজন বলেন, ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর আঘাতে সড়কটি তলিয়ে যায়। এরপর আর সংস্কার করা হয়নি। এছাড়া সড়ক সংস্কারের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অধিকাংশ জায়গা থেকে ইট তুলে নেয়ার কারণে জনবহুল এ রাস্তাটি হারিয়ে যেতে বসেছে। দিনের বেলায় কোনোমতে মানুষ চলাচল করলেও রাতের অন্ধকারে খানাখন্দে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়। সড়কের উপর নির্ভর করে নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজে আসা এলাকার সহস্রাধিক মানুষ পার্শ্ববর্তী ইসলামপুর নৌঘাট দিয়ে চলাচল করে। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নেয়াও কষ্ট সাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বলেন, সড়কে দুর্ভোগের কারণে পরিবহনে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হচ্ছে। সড়ক না থাকায় গাড়ি প্রবেশ করতে পারছে না। তাছাড়া এই সড়ক পথে হাজার হাজার লবণ-মৎস্য শ্রমিক যাতায়াত করে। তালি জোড়া সড়কের কারণে তাদেরও দুর্ভোগ কমছে না। এছাড়া এলাকার মানুষ মৎস্য ও লবণ শিল্প নির্ভর, তাঁরা উৎপাদিত পণ্য বিক্রির জন্য ইসলামপুরে নিয়ে যেতে সীমাহীন কষ্ট ভোগ করে। কক্সবাজার এলজিইডির জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার দাবি করছেন সর্বস্তরের মানুষ।
ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য ইয়াছিন উল্লাহ বলেন, রোয়ানুর পর থেকে আজ পর্যন্ত জনবহুল এ রাস্তা দিয়ে মানুষ ও যানবহন চলাচল অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। তাই জরুরি ভিত্তিতে এ রাস্তাটি দ্রুত সংস্কার প্রয়োজন।
পোকখালী ইউপি চেয়ারম্যান রফিক আহমদ বলেন, রোয়ানুর পর বহুল জনগোষ্টি অধ্যুষিত এ রাস্তাটি অবহেলিত রয়েছে। বারবার রাস্তাটির দুরবস্থা সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে কাগজপত্র দেয়া হলেও তারা কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেনা। একে-অপরের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে এড়িয়ে যাচ্ছেন। যার কারণে বঞ্চিত হয়েছে এলাকার মানুষ। দ্রুত রাস্তাটি সংস্কার করার জন্য তিনি কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানান।
ঈদগাঁও উপজেলা প্রকৌশলী মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, গোমাতলী ব্রীজ থেকে রাজঘাট পর্যন্ত রাস্তাটি সার্ভে করে প্রাক বাজেট সম্পন্ন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।