Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

চকরিয়ায় মামলায় জড়িয়ে হয়রানির প্রতিবাদে মানববন্ধন

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের দাতিনাখালী পাড়া এলাকায় বসতবাড়ির উঠান ও চলাচল পথ জবরদখলে ব্যর্থ হয়ে স্থানীয় মোহাম্মদ ফারুক নামের এক নিরীহ ব্যক্তির পরিবার সদস্যদের বিরুদ্ধে ১৭ বছর সন্তান জন্ম দিতে অক্ষম নারীর গর্ভের সন্তান নষ্ট করার সাজানো অভিযোগ তুলে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। 

স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের ইন্ধনে গত চার বছর ধরে  একের পর এক মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানির করার প্রতিবাদে এবং লাগামহীন হয়রানি নির্যাতন থেকে নিস্তার পেতে মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে বদরখালী ফেরীঘাট এলাকায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন ভুক্তভোগী মোহাম্মদ ফারুকের পরিবার সদস্য এবং স্থানীয় এলাকাবাসী। 

মানববন্ধনে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরে বক্তব্য দেন ভুক্তভোগী গৃহকর্তা মোহাম্মদ ফারুক, তাঁর কলেজ পড়ুয়া ছেলে মোহাম্মদ মোরশেদ, মেয়ে নাসরিন সুলতানা ও ভাই আবু ছাদেক। এসময় উপস্থিত ছিলেন গৃহকর্তা ফারুকের ছেলে খোরশেদ আলম, মোহাম্মদ তফসির, মেয়ে উন্মে হাবিবা এবং এলাকার বিভিন্ন পেশার নাগরিকেরা।

ভুক্তভোগী গৃহকর্তা মোহাম্মদ ফারুকের মেয়ে নাসরিন সুলতানা বলেন, আমাদের বাড়ির সামনে উঠান যা আমাদের একমাত্র চলাচলের পথ। এই চলাচলের পথ বন্ধ করে ঘর নির্মাণের চেষ্টা করেছিল আমার চাচা বেলাল হোছাইন ও নাজেম উদ্দিন। এ অবস্থায় আমার বাবা ও ভাইয়েরা এই অবৈধ জবরদখলে বাধা দেওয়ায় উল্টো হামলা চালিয়ে তাঁরা আমার পরিবার সদস্যদের মারধর করে গুরুতর জখম করে। এ ঘটনার জেরে অভিযুক্তরা স্থানীয় কতিপয় মহলের চক্রান্তে বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে আমার বাবা, ভাই ও আমাদের গত চারবছর ধরে চরমভাবে হয়রানি করে আসছে। তাদের ধারাবাহিক মিথ্যা মামলায় হয়রানি এবং শারিরীক মানসিক নির্যাতনে আমার পরিবার সদস্যরা আজ দিশেহারা। 

তিনি বলেন, অভিযুক্তরা এতটাই নিষ্ঠুর হয়েছে যে গত রমজান মাসে আমাদের পৈতৃক টিউবওয়েল থেকে পানি পর্যন্ত খেতে দেয়নি তাঁরা। এ ঘটনা নিয়ে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে অভিযোগও করা হয়েছিল। অভিযুক্ত চাচা এবং তাদের সহযোগীরা মানসিকভাবে অত্যন্ত খারাপ লোক। তারা এলাকার কারো কথা মানে না। শুধুই নিজেদের স্বার্থটিই দেখে। 

ভুক্তভোগী পরিবারের গৃহকর্তা মোহাম্মদ ফারুক (৬২) বলেন, আমার বাড়ির সামনের উঠান ও চলাচলের পথ উম্মুক্ত রাখতে ইতোপূর্বে আদালত ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতের সুস্পষ্ট আদেশ থাকলেও অভিযুক্তরা তা মানতে চায়না। তাঁরা বারবার আমাদের চলাচলের পথ অবরুদ্ধ করে স্থাপনা নির্মাণ করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তারপরও তাঁরা জবরদখল চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে এখন নতুন নতুন নাটকের অবতারণা করে সাজানো ঘটনা দেখিয়ে মিথ্যা মামলায় আসামি করে আমার পরিবার সদস্যদের হয়রানি করছেন। এভাবে গত চারবছর ধরে আমার পরিবারকে জিম্মি করে রেখেছে তাঁরা। 

গৃহকর্তা ফারুকের ছেলে মোহাম্মদ মোরশেদ বলেন, এখন চলাচল পথ জবরদখলের জন্য চাচা বেলাল হোছাইন নতুন একটি নাটক সাজিয়েছেন। ১৭ বছরে তিনি চারটি বিয়ে করেছেন। দুই স্ত্রী তাঁকে ছেড়ে দিয়ে চলে গেছে। সংসারে বর্তমানে দুই স্ত্রী রয়েছে। এখনো কেউ সন্তান জন্ম দিতে পারেনি। সেই নারীদের একজন শামীমা নাসরিনের গর্ভের সন্তান নষ্ট করার অভিযোগ এনে আমার চাচা বেলাল হোছাইন গত ২ জানুয়ারি চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রোট আদালতে আমাদের বিরুদ্ধে একটি  মিথ্যা ও সাজানো মামলা দায়ের করেছে।এই রকম একটি ঢাহা মিথ্যে ঘটনা সাজিয়ে আমি ও চট্টগ্রাম মহসিন কলেজে মাস্টার্সে অধ্যায়নরত আমার ছোট ভাইয়ের জীবন হুমকির মুখে ফেলেছে। আমার বাড়ির পাশের কিছু শিক্ষিত নামের অমানুষের কবলে পড়ে তাঁরা আমাদের বিরুদ্ধে এসব মিথ্যা মামলা করে হয়রানি করে আসছে। 

মানববন্ধন পরবর্তী বদরখালী দাতিনাখালী পাড়ার নিজবাড়িতে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী মোহাম্মদ ফারুকের পরিবার। সাংবাদিক সম্মেলনে তাঁরা একটি চলাচল পথ নিয়ে দখলবাজ চাচা চক্রের মুখোশ উন্মোচন করে জড়িত চক্রের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে। একইসঙ্গে ভুক্তভোগী পরিবারটি সাংবাদিকদের সহযোগিতা চেয়ে বলেন, আপনাদের লেখনীর মাধ্যমে আমরা প্রশাসন ও আদালতের কাছে সুবিচার কামনা করছি। পাশাপাশি নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে আমাদের পরিবার সদস্যদের বিরুদ্ধে গর্ভের সন্তান নষ্ট করার অভিযোগ তুলে দায়ের করাসাজানো মামলাটি অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।

2Shares