
নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের ঐতিহাসিক রায়ের মধ্য দিয়ে দেশ আবারও গণতান্ত্রিক মহাসড়কে হাঁটা শুরু করেছে বলে মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বৈধ উল্লেখ করে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের রায় ঘোষণার পর অ্যাটর্নি জেনারেল সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য একটি সহায়ক ব্যবস্থা। আজ থেকে জনগণ নিশ্চিন্তভাবে নিজের ভোট নিজে দিতে পারবেন। এখন থেকে দিনের ভোট দিনেই অনুষ্ঠিত হবে এবং মৃত ব্যক্তির ভোট দেওয়ার কোনো সুযোগ থাকবে না। এটি গণতান্ত্রিক মহাসড়কের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’
তিনি বলেন, ‘আমরা কোর্টে সাবমিশন করেছি যে আমাদের কাছে একটি লিগাল প্রিন্সিপল রয়েছে, যা হলো ‘অ্যাপ্লিকেবিলিটি অফ ল’। সুপ্রিম কোর্টের জাজমেন্ট মূলত আর্টিকেল ১১১-এর অধীনে দেওয়া হয়। কোনো জাজমেন্ট স্বাভাবিকভাবে রেট্রোসপেকটিভ হয়, যদি তা স্পষ্টভাবে প্রসপেকটিভ না বলা থাকে। আপিল বিভাগ এটি প্রসপেকটিভ ইফেক্ট দিয়েছে, অর্থাৎ আগামী সংসদ ডিজলভ হওয়ার পর থেকে রায় কার্যকর হবে। ফলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃস্থাপন হয়েছে।’
তিনি উল্লেখ করেন, পুরনো পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল হলেও, তা আপিল বিভাগে এখনো পেন্ডিং। বলেন, ‘আজকের রায় মূলত ১৩তম সংশোধনী সংশোধনের পরিপ্রেক্ষিতে। এটি কোনোভাবে পঞ্চদশ সংশোধনী বা অন্য কোন বিষয়কে ক্লাশ করবে না। আপিল বিভাগের এই রায় অতীতের হাইকোর্ট জাজমেন্টের ওপর প্রভাব ফেলবে না এবং এটি পরবর্তী রিভিউ বা অন্য জাজমেন্টে পুনঃপর্যালোচনার সুযোগও সীমিত করবে।’
তিনি বলেন, ‘এই রায় গণতন্ত্রের স্বার্থে সুপরিকল্পিত। ফিফটিন অ্যামেন্ডমেন্ট সংক্রান্ত মামলা যদি আপিল বিভাগে প্রত্যাখ্যাত হয়, সেক্ষেত্রে তা নতুন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এগোবে। তবে আপিল বিভাগের আজকের রায় একটি ‘পাস্ট অ্যান্ড ক্লোজ্ড চ্যাপ্টার’, যা নির্বাচনের জন্য নির্দিষ্ট কাঠামো প্রদান করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে গণতন্ত্রের কবর রচনা করেছিলেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এ বিএম খায়রুল হক।’
এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
আপিল বিভাগ বলেন, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর চতুর্দশ সংসদ নির্বাচন থেকে কার্যকর হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা।’




