
ভগবান শ্রী কৃষ্ণের শুভ আবির্ভাব তিথিকে ঘিরে চারদিন ব্যাপী বর্ণাঢ্য আয়োজন করেছে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ ও নিত্যানন্দ গীতা সংঘ। এজন্য অনুষ্ঠানস্থল চকরিয়া সার্বজনীন কেন্দ্রীয় মন্দিরকে সাজানো হয়েছে নবরুপে। শ্রী কৃষ্ণের শুভ আবির্ভাব তিথি যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয় সেজন্য উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক নিরাপত্তা নেয়া হয়েছে।
জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ চকরিয়া উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নন্দরাম দাশ ও অর্থ সম্পাদক উজ্জ্বল দে শিমুল বলেন, গত ২৭ বছর ধরে উপজেলা জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ ও নিত্যানন্দ গীতা সংঘ যৌথ উদ্যোগে ভগবান শ্রী কৃষ্ণের শুভ আবির্ভাব তিথি উপলক্ষে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান আয়োজন করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় এবছরও চারদিন ব্যাপী নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
তাঁরা বলেন, শনিবার সকালে সংঘের পতাকা ও ধ্বজা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু হবে। শুরুতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। এতে অংশ নেবে অন্তরা সাংস্কৃতিক শিক্ষা কেন্দ্রের শিল্পীরা। সকাল ১১টায় চকরিয়া সার্বজনীন কেন্দ্রীয় হরি মন্দির থেকে বের করা হবে বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা। মঙ্গল শোভাযাত্রাটি চকরিয়া পৌরশহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় সার্বজনীন কেন্দ্রীয় হরি মন্দিরে গিয়ে শেষ হবে।
মঙ্গল শোভাযাত্রায় চকরিয়া উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে সনাতনী সম্প্রদায়ের ভক্তরা অংশ নেবেন। এছাড়াও উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত থাকবেন। রোববার সকালে অনুষ্ঠিত হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে অংশ নেবে সুর তরঙ্গ সঙ্গীত একাডেমির শিল্পীরা।
চকরিয়া উপজেলা জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সভাপতি নারায়ন কান্তি দাশ বলেন, ভগবান শ্রী কৃষ্ণের শুভ আর্বিভাব তিথি যাতে সুষ্টু ও সুন্দরভাবে উদযাপন করতে পারি সেজন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। মন্দির প্রাঙ্গনকে মনের মাধুরি মিশিয়ে সাজানো হয়েছে।
চারদিনব্যাপী অনুষ্ঠানের দ্বিতীয়দিন রোববার বেলা ৩টায় দ্বাদশ প্রহরব্যাপী মহানামযজ্ঞের শুভ অধিবাস হবে। এতে পৌরহিত্য করবেন চট্টগ্রাম শ্রী শ্রী গৌরাঙ্গ বাড়ী সেনাশ্রমের অধ্যক্ষ শ্রী শ্রী ১০৮ স্বরুপ দাস বাবাজী।
তিনি আরও বলেন, রোববার সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়া দ্বাদশ প্রহরব্যাপী মহানামযজ্ঞে সানসুধা পরিবেশন করবেন শ্রী শ্রী গৌরবাণী সম্প্রদায় (ঝিনাইদহ), শ্রী শ্রী মহাপ্রভু সম্প্রদায় (গোপালগঞ্জ), শ্রী শ্রী পতিতপাবণ সম্প্রদায় (যশোর) এবং শ্রী শ্রী সোনার গৌর সম্প্রদায় (সাতক্ষীরা)। মঙ্গলবার ভোরে পূর্ণাহুতি ও বৈষ্ণব বিদায়ের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটবে। আশাকরি সনাতনী সম্প্রদায় ছাড়াও অন্যান্য সস্প্রদায়ের লোকদের উপস্থিতির মধ্য দিয়ে চারদিন ব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান অসাম্প্রদায়িক চেতনার এক মহামিলন ঘটবে।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, জন্মাষ্টমী মহোৎসব যাতে সুষ্ঠু, সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সমাপ্ত করতে পারি, সেজন্য পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হবে। পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, সাদা পোশাকের গোয়েন্দা পুলিম সার্বক্ষণিক নজরদারি করবে।
চকরিয়া সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুপায়ন দেব বলেন, শুভ জন্মাষ্টমী মহোৎসব যাতে সুন্দর ও শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়, তাই সেনাবাহিনী ও পুলিশ প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। আশাকরি সকলের সহযোগিতায় সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে জন্মাষ্টমী অনুষ্ঠান।