কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে ভাঙচুর, সরকারি কাজে বাধা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দায়ের করা ২৩০টি মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে আদালতে। এসব মামলা থেকে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীসহ ৩ হাজার ৫৮ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
গত কয়েক দিনে এই মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করার পর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রতিবেদনগুলো গ্রহণ করে এ আদেশ দেন।
দায়ের করা ২৯০টি মামলার মধ্যে ২৩০টির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (পুলিশ সুপার পদে সুপারিশপ্রাপ্ত) ফখরুজ্জামান জুয়েল।
অব্যাহতি পাওয়া উল্লেখযোগ্যরা হলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, জহির উদ্দিন স্বপন, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সায়েদুল আলম বাবুল, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীম, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব আমিনুল হক, গণঅধিকার পরিষদের (একাংশ) সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর, জামায়াতের নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের, জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য সামিউল হক ফারুকী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ডা. সাখাওয়াত হোসেন সায়ন্থ।
কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হওয়ার পর গত ১৩ জুলাই থেকে রাজধানীর বিভিন্ন স্থাপনাসহ বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ শুরু হয়। এসব ঘটনায় গত ১৭ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত রাজধানীতে ২৯০টি মামলা হয়। এতে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মী, শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজনকে আসামি করা হয়। এসব মামলার মধ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের রমনা বিভাগে ৪২টি, লালবাগ বিভাগে ১৭টি, মতিঝিল বিভাগে ৪০টি, ওয়ারী বিভাগে ৫৫টি, তেজগাঁও বিভাগে ৩৩টি, উত্তরা বিভাগে ৩১টি, গুলশান বিভাগে ৪২টি ও মিরপুর বিভাগে ৩০টি মামলা দায়ের করা হয়। ৫ আগস্ট পর্যন্ত ৩ হাজারের বেশি আসামিকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশত্যাগ করার পর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে। এরপর কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে দায়ের করা মামলাগুলো ৩১ আগস্টের মধ্যে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। তার পরিপ্রেক্ষিতে আজ ২৩০টি মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে আসামিদের অব্যাহতি দেওয়া হলো।